
oplus_2
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
কৈলাসহর জেলা হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ২০টিরও বেশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) বসানোর ছয় মাস পার হয়ে গেলেও আজও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। কোটি টাকার এসি অযত্নে পড়ে নষ্ট হচ্ছে, ইঁদুর কেটে দিচ্ছে তার, অথচ প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই। স্বাস্থ্য দপ্তরের চরম অব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ দপ্তরের চূড়ান্ত গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সরকার প্রায় কোটি টাকা খরচ করে এসি বসালেও, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সেগুলো ব্যবহারের আগেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারি টাকা খরচ করেই যদি এগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকে, তাহলে এর দায় কার? স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্ব কি কেবল প্রকল্প চালু করা, নাকি তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা?
এই প্রসঙ্গে মেডিকেল সুপার ডা. রোহন পাল জানান, এসি বসানোর সিদ্ধান্ত তার পূর্ববর্তী সময়ে নেওয়া হয়েছিল, তাই তিনি কিছু বলতে পারবেন না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, হাসপাতালের বর্তমান প্রশাসন কি শুধুই দর্শকের ভূমিকা পালন করছে?
সুত্রের খবর অনুযায়ী স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ সংস্থাকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা প্রদান করলেও, এখনো পর্যন্ত হাসপাতালে পৃথক ট্রান্সফরমার বসানো হয়নি। ফলে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ অত্যন্ত দুর্বল, সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ চলে যায়। হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত না করে বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা সাই কম্পিউটার কীসের ভিত্তিতে পরিষেবা চালাচ্ছে?
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সাই কম্পিউটার হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। শহরের অন্যান্য এলাকাগুলোর মতো হাসপাতালেও তারা অব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত উদাহরণ তৈরি করেছে।
গরমের মৌসুম আসতে আর বেশি দেরি নেই। মেডিসিন ওয়ার্ডে এসি থাকার পরেও রোগীদের হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে, বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে সেগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, যদি বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে এই বছরও রোগীদের একই দুর্ভোগের শিকার হতে হবে।
প্রায় কোটি টাকা খরচের পরও এসিগুলো চালু করার ব্যবস্থা করতে না পারা প্রশাসনিক ব্যর্থতারই প্রমাণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও অনেকের অভিমত।
সাই কম্পিউটার যদি সরকারি টাকা নেওয়ার পরও ট্রান্সফরমার না বসায়, তাহলে সরকারকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে জেনারেটর বা বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা দরকার।
কৈলাসহর জেলা হাসপাতালের এই সংকট স্বাস্থ্য দপ্তর ও বিদ্যুৎ সংস্থার যৌথ গাফিলতির ফসল বলেই মনে করছেন মহকুমাবাসী।