
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর, ঊনকোটি, ত্রিপুরা
আজকের দিনটি ভারতের ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিরস্মরণীয়। ২০১৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৪৪ জন বীর সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। সেদিন ভারত কেঁপে উঠেছিল, পুরো দেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল এই মর্মান্তিক ঘটনার সামনে।
২০১৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি, বিকাল প্রায় ৩:১৫ মিনিট। সিআরপিএফ-এর ৭৮টি গাড়ির একটি কনভয় জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিল। ২,৫০০-র বেশি জওয়ান এই কনভয়ে ছিলেন, যারা তাঁদের দায়িত্ব পালনের জন্য শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন।
ঠিক তখনই, জইশ-ই-মোহাম্মদ (JeM) নামক পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য আদিল আহমেদের ৩৫০ কেজি বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি নিয়ে জওয়ানদের কনভয়ের একটি বাসে আত্মঘাতী হামলা চালায়। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে বাসটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়, এবং ৪৪ জন জওয়ান শহিদ হন। এই হামলার দায় স্বীকার করে নেয় জইশ-ই-মোহাম্মদ।
এই ঘটনার পর গোটা ভারত শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশজুড়ে শোকসভা ও প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
আজ কৈলাসহর মন্ডলের উদ্যোগে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কৈলাসহর কারগিল কর্নারে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়,বিজেপি মন্ডল সভাপতি প্রীতম ঘোষ,মন্ডল মহিলা মোর্চার সভানেত্রী মুক্তা পাল,অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ জনগণ।
প্রসঙ্গ উল্লেখ্য যে,পুলওয়ামা হামলার পর ভারত প্রতিশোধের শপথ নেয়। মাত্র ১২ দিনের মাথায়, ২৬শে ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে এয়ার স্ট্রাইক চালায়, যাতে বহু সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়।
কৈলাসহরের এই ছোট্ট আয়োজন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এই শহিদদের আত্মত্যাগ কখনো ভোলার নয়। এই নৃশংস হামলায় যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শুধু এক দিনের কাজ নয়—এটা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব।