
প্রতিনিধি। অনুপম পাল।কৈলাসহর
ত্রিপুরার কৈলাসহরের ধলিয়ারকান্দি ২ নম্বর ওয়ার্ড যেন সোমবার সকালে পরিণত হল ক্ষুব্ধ জনতার প্রতিবাদের মঞ্চে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও পানীয় জলের সংকট—দুই মৌলিক পরিষেবার চূড়ান্ত ব্যর্থতাকে কেন্দ্র করে, এলাকার শতাধিক বাসিন্দা একত্রিত হয়ে কৈলাসহর বাবুরবাজার ও টিলাবাজার সংলগ্ন প্রধান সড়কে পথ অবরোধ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের পর দিন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। কখনও থাকে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা, আবার থাকলেও ভোল্টেজ এতটাই কম যে ফ্যান ঘোরে না, ফ্রিজ চলে না। পানীয় জলের অবস্থা আরও করুণ। এই পরিস্থিতির জন্য এলাকাবাসীরা সরাসরি আঙুল তুলেছেন বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা “সাই কম্পিউটার”-এর দিকে। জনতার অভিযোগ, এই সংস্থার নেই পর্যাপ্ত পরিকাঠামো, নেই অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান, আর গ্রাহক পরিষেবা বলতে শুধু “ধৈর্য ধরুন” টাইপ আশ্বাস। কার্যত তাদের পরিষেবা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দীর্ঘদিনের। সোমবার তা যেন বিস্ফোরিত হল।
অবরোধকারীদের মধ্যে এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না, জল পাচ্ছি না, অথচ বিল ঠিকঠাক আসছে।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান সাই কম্পিউটারের কয়েকজন আধিকারিক। তারা পাঁচ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিলে, আপাতত অবরোধ তুলে নেয় জনতা। তবে হুঁশিয়ারি স্পষ্ট—সমাধান না হলে আরও বড় আন্দোলন হবে, এবং সেটা ব্লকস্তর ছাড়িয়ে জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। উন্নয়নের প্রচার আর বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক, সেটা আবারও প্রমাণ করল এই ধলিয়ারকান্দির ঘটনা।
অতএব প্রশ্ন জাগে—নাগরিকের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা যদি এতদিনেও মেটানো না যায়, তবে উন্নয়নের গন্তব্য আসলে কোথায়? ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে—এটাই হয়তো এখনো শান্তিপূর্ণ থাকা জনতার সর্বশেষ সাবধানবাণী।