প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
কৈলাসহরের ফুলবাড়ীকান্দি এলাকায় গত বছরের একটি নির্মম ঘটনা এখনও সমাজকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি মাত্র ১৩ বছরের এক নাবালিকাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে গণধর্ষনের শিকার হতে হয়। প্রায় এক বছর পর, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত তুরাব আলীকে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করেছে কৈলাসহর মহিলা থানার পুলিশ।
কৈলাসহরের শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মছদ্দর আলীর ছেলে তুরাব আলী (২৫) এবং তার সহযোগী তফজ্জুল আলী ও ফুয়েজ আলী মিলে নাবালিকাকে অপহরণ করে মনুভ্যালি চা বাগান এলাকার এক নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে গণধর্ষণের পর নির্জন স্থানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। নাবালিকার কান্না শুনে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নাবালিকাকে উদ্ধার করে।
ঘটনার পর, নাবালিকার বাবা ৮ জানুয়ারি কৈলাসহর মহিলা থানায় তিনজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পক্সো আইনসহ ৩৬৩/৩৭৬ (ডি) ধারায় মামলা রেজিস্ট্রি করে। দ্রুত তদন্ত চালিয়ে তফজ্জুল আলী এবং ফুয়েজ আলীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও মূল অভিযুক্ত তুরাব আলী পালিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
মহিলা থানার ওসি রিপিতা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল চেন্নাই যায় এবং গভীর রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কৈলাসহরে নিয়ে আসে। ১৪ জানুয়ারি অভিযুক্তকে কৈলাসহর আদালতে প্রেরণ করা হয়।
১৩ বছরের এক নাবালিকার জীবনে এই নির্মম ঘটনাটি যেমন এক গভীর ক্ষত তৈরি করেছে, তেমনই এটি সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকটি উন্মোচিত করেছে। স্থানীয়দের মতে, কঠোর শাস্তি দেওয়া হলে এমন অপরাধে জড়ানোর সাহস কেউ পাবে না।
এই ঘটনার সফল সমাধান পুলিশ প্রশাসনের নিরলস পরিশ্রমের ফল। তবে এমন ঘটনা বন্ধে শুধু পুলিশি ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা এবং নৈতিকতার প্রসার ঘটানো প্রয়োজন। একইসঙ্গে, শিশু সুরক্ষা আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো নাবালিকাকে এমন দুঃসহ পরিস্থিতির শিকার না হতে হয়।