কৈলাসহর,প্রতিনিধি অনুপম পাল,ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক অটল কবিতা ও সাহিত্য উৎসব ২০২৪ আজ থেকে ঊনকোটি কলাক্ষেত্রে শুরু হয়েছে। এই উৎসবের মূল লক্ষ্য হলো রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতির সৃজনশীল দিকগুলিকে আরও প্রসারিত করা এবং নতুন প্রজন্মের লেখক ও কবিদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা।
উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ, সমাজ শিক্ষা, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী টিংকু রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তপশিলি জাতি কল্যাণ ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি এস গম্ভীনি, আসাম থেকে আগত সাহিত্য একাডেমি এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য দিগন্ত বিশ্বশর্মা, এবং ঊনকোটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।
উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রয়াত নেতা ও ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জীবনের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। একই সঙ্গে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।
বিশিষ্ট কবি ও লেখক মিলন দত্তকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়, যার সঙ্গে ১ লক্ষ টাকার চেক এবং একটি স্মারক উপহার দেওয়া হয়। কবি এস গম্ভীনি ও দিগন্ত বিশ্বশর্মাকেও সাহিত্যিক অবদানের জন্য বিশেষ স্মারক প্রদান করা হয়।
তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য তাঁর ভাষণে বলেন, “অটল বিহারী বাজপেয়ী একজন অসাধারণ কবি, রাজনৈতিক নেতা এবং ভারতের সেবক ছিলেন। তাঁর সাহিত্যিক প্রতিভা এবং দেশের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা আমাদের সবার জন্য প্রেরণার উৎস।”
মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, “অটলজি শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন চিন্তাবিদ ও কবি। তাঁর নেতৃত্বে ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের শক্তিশালী উপস্থিতি জানান দিয়েছে। এই উৎসব রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতির অনন্য ঐতিহ্যকে দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।”
মন্ত্রী সুধাংশু দাস তাঁর ভাষণে বলেন, “অটল বিহারী বাজপেয়ী জাতিসংঘে হিন্দিতে ভাষণ দিয়ে ভারতীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছিলেন। তাঁর উদ্যোগে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য যে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তা আজও প্রাসঙ্গিক।”
উৎসবের প্রথম দিনে কবিতা পাঠ, সাহিত্য আলোচনা, এবং তরুণ কবিদের জন্য বিশেষ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নতুন প্রজন্মের লেখকদের সৃজনশীলতা বিকাশে এই উদ্যোগ বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
গত বছর গোমতী জেলার উদয়পুরে এই উৎসবের প্রথম সংস্করণ আয়োজন করা হয়েছিল। এবার উৎসবের দ্বিতীয় সংস্করণ আয়োজিত হচ্ছে ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত কবি ও সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে ঊনকোটি কলাক্ষেত্র উৎসবের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, উৎসবের শেষ দিনে আরও চমকপ্রদ কার্যক্রম ও কর্মশালার আয়োজন করা হবে। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মতে, রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের এই উদ্যোগ রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়াতে সহায়ক হবে।