
প্রতিনিধি অনুপম পাল, কৈলাসহর
শনিবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাতটার সময় কৈলাসহর গৌরনগরস্থিত ১৩২ কেভি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এই দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন দুই কর্মী—কাউলিকুড়া এলাকার বাসিন্দা শংকর দেবনাথ এবং কৈলাসহর পৌরসভার গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা দেবাশীষ দাস। আহতদের মধ্যে শংকর দেবনাথের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রান্সফর্মার চালু রাখতে ব্যবহৃত দাহ্য তেলে ভরা যন্ত্রাংশ থেকে আচমকাই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে ফুটন্ত তেল দু’জন কর্মীর শরীরে এসে পড়ায় তারা মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।আহতদের প্রথমে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চালু করতে সমস্যা দেখা দেয়। স্থানীয়দের উদ্যোগে জেনারেটর চালু হওয়ার পর চিকিৎসা শুরু হয়। পরে গুরুতর আহত দেবাশীষ দাসকে রেফার করে বেসরকারি ঊনকোটি নার্সিং কেয়ারে ভর্তি করা হয়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই প্রথমে জেলা হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে নার্সিং কেয়ারে ছুটে যান রাজ্যের সমাজ শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় এবং ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবস্বর আলী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী টিংকু রায় জানান, “এই ঘটনায় বিদ্যুৎ দপ্তরের দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। একজনকে বহিঃরাজ্যে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছেন তার পরিবার এবং অন্যজনকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রয়োজনে আগরতলা জিবিপি হাসপাতালে রেফার করার ব্যবস্থাও করা হবে। সরকার তাদের পাশে রয়েছে।”
উল্লেখ্য, মাত্র দু’দিন আগে দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পর কৈলাসহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছিল। নিয়মিত মেরামতির নামে ঘনঘন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার অভিযোগ এর আগে থেকেই উঠছিল। বড়সড় এই দুর্ঘটনার পর বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মপদ্ধতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।খবর লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চললেও শনিবার রাতেই শহরে বিদ্যুৎ ফিরবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। মহালয়ার আগের দিন এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গোটা মহকুমা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।