
প্রতিনিধি অনুপম পাল, কৈলাসহর
আজ ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যপ্রদেশের ধার-এ আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা করেন ‘সুস্থ নারী, সশক্ত পরিবার’ এবং ‘অষ্টম রাষ্ট্রীয় পোষণ মাস’ অভিযানের। প্রধানমন্ত্রী এদিন বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন এবং এক সভায় ভাষণ দেন।
স্বাস্থ্য, পুষ্টি, ফিটনেস এবং সশক্ত ভারতের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের ধারাবাহিকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির, কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জেলা হাসপাতাল এবং অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হবে। যা দেশের মহিলা ও শিশুদের জন্য সর্বকালের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সারা দেশের পাশাপাশি ঊনকোটি জেলায়ও শুরু হলো “সুস্থ নারী, সশক্ত পরিবার অভিযান”। জেলা স্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সমাজ শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার, পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শির্সেন্দু চাকমা, আরজিএম হাসপাতালের মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক পাপিয়া রুদ্র পাল, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবস্বর আলী সহ অনান্য বিশিষ্টজনেরা।
এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো প্রতিদিন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করা এবং মহিলা-কেন্দ্রিক রোগ প্রতিরোধ, প্রচার ও নিরাময়মূলক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান। এর মাধ্যমে—অ-সংক্রামক রোগ, রক্তাল্পতা, যক্ষ্মা ও সিকল সেল রোগের প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।প্রসবকালীন যত্ন, টিকাদান, পুষ্টি, মাসিক স্বাস্থ্য, জীবনধারা ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো হবে।মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপাতাল ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্ত্রীরোগ, শিশুচিকিৎসা, চক্ষু, ইএনটি, ডেন্টাল, চর্মরোগ ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে পরিষেবা চালু হবে।
সুবিধাভোগীদের পিএম-জেএওয়াই, আয়ুষ্মান বয় বন্দনা ও আভা-র আওতায় নথিভুক্ত করা হবে।স্বাস্থ্য শিবিরে কার্ড যাচাই ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য হেল্পডেস্ক চালু থাকবে।যোগ, আয়ুর্বেদ ও আয়ুষ পরিষেবার মাধ্যমে সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করা হবে।স্থূলতা প্রতিরোধ, উন্নত পুষ্টি ও রক্তদানের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।নাগরিকদের www.nikshay.in প্ল্যাটফর্মে নিক্ষয় মিত্র হিসেবে নিবন্ধনের জন্য উৎসাহিত করা হবে, যাতে যক্ষ্মা রোগীদের সহায়তা করা যায়।প্রধানমন্ত্রী মাত্রুবন্দনা যোজনার আওতায় সারা দেশের তালিকাভুক্ত মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে, যার ফলে প্রায় ১০ লক্ষ মহিলা উপকৃত হবেন।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন,“প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির হাত ধরে শুরু হলো সুস্থ নারী, সশক্ত পরিবার এবং অষ্টম রাষ্ট্রীয় পোষণ মাস অভিযান। এটি শুধু একটি স্বাস্থ্য অভিযান নয়, বরং নারী ও শিশুর সুস্থতার জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।ঊনকোটি জেলায়ও আজ এই কর্মসূচির সূচনা হলো। প্রতিটি মহিলা ও শিশু তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ পাবেন। সরকার মহিলা-কেন্দ্রিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিকে সামনে রেখে প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।স্বাস্থ্য শিবিরগুলিতে রক্তাল্পতা, যক্ষ্মা, সিকল সেল ও অন্যান্য রোগের প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা হবে। পাশাপাশি মা ও শিশুর যত্ন, টিকাদান, পুষ্টি, মানসিক স্বাস্থ্য এবং জীবনধারার উন্নতিতেও বিশেষ জোর দেওয়া হবে।আমি আশাবাদী, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের জেলার অসংখ্য পরিবার উপকৃত হবেন। সমাজ শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দপ্তর সর্বদা মানুষের পাশে আছে এবং এই কর্মসূচিকে সফল করতে আমরা প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, সমাজকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করি।আসুন আমরা সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করি—সুস্থ নারী, সশক্ত পরিবার গড়ে তুলে একটি সমৃদ্ধ ভারত গড়ে তুলব।”