
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
ধলাই জেলার মনু এলাকার বাসিন্দা দিপালী বিশ্বাসের জীবনরক্ষা করে এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ঊনকোটি জেলা হাসপাতাল। প্রায় বছর দেড়েক আগে দুর্ঘটনাজনিত কারণে তার পা ভেঙে যায়। পরবর্তীতে সঠিক চিকিৎসার অভাবে পায়ে গ্যাংগ্রিন (Gangrene) দেখা দেয় এবং পরিস্থিতি দিন দিন আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে।
গ্যাংগ্রিন একটি মারাত্মক রোগ যেখানে রক্ত সরবরাহের অভাবে দেহের কোনো অঙ্গের কোষ মারা যায়। সাধারণত আঘাত, সংক্রমণ বা দীর্ঘস্থায়ী রক্ত সঞ্চালন সমস্যার কারণে এটি হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে ত্বকের রঙ পরিবর্তন, অসাড়তা, অস্বাভাবিক ব্যথা ও ক্ষতস্থানে পঁচন ধরা দেখা দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করেও সুফল মেলেনি। শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নেওয়া হয় কৈলাশহর জেলা হাসপাতালে। তখন দিপালী দেবীর শারীরিক অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে ওঠে যে, জীবন সংশয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়।
জানা গেছে, রোগীর হিমোগ্লোবিন মাত্রা নেমে গিয়েছিল পাঁচের নিচে। পরিস্থিতি অনুধাবন করে জেলা হাসপাতালের অস্থি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নির্মল দেববর্মা দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি দিপালী দেবীর বাম পায়ের নিচের অংশ অপারেশনের মাধ্যমে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেন।অপারেশনের আগে রোগীকে দেওয়া হয় তিন ইউনিট রক্ত। এরপর ডা. দেববর্মা, অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডা. রূপময় দাস, ওটি নার্স কাবেরী সাহা, ওটি অ্যাসিসটেন্ট মিঠুন মল্ল ও সুভাষ দেববর্মা-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতায় অপারেশনটি সম্পন্ন করেন।ফলস্বরূপ, মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা দিপালী দেবী নতুন জীবন ফিরে পান।
এই সফল অস্ত্রোপচারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঊনকোটি জুড়ে ডা. নির্মল দেববর্মা ও তার টিমের প্রশংসা করছেন জেলার সর্ব স্তরের মানুষ। সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যেও যে একাগ্রতা, আত্মবিশ্বাস ও কর্তব্যনিষ্ঠার মাধ্যমে জটিল অপারেশন সম্ভব—সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ঊনকোটি জেলা হাসপাতাল।