
Oplus_0
প্রতিনিধি। অনুপম পাল। কৈলাসহর
কৈলাসহর শহরে প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হয়ে উঠছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। নির্দিষ্ট কোনো স্থায়ী ডাম্পিং সেন্টার না থাকায়, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুর প্রশাসনকে। বাড়ির আবর্জনা ছাড়াও সবজি, মাছ ও মাংস বাজার থেকে প্রতিদিন বহু গুণ বেশি বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। তার উপর, জেলা ও মহকুমা হাসপাতালগুলোর মেডিক্যাল বর্জ্য—যার নিষ্পত্তি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং সতর্কতা-নির্ভর—সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট স্থানের অভাবে চিন্তিত পুর কর্তৃপক্ষ।এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুর প্রশাসন ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে। আজ দুপুরে পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়ের নেতৃত্বে, ডেপুটি সিইও হেমন্ত ধর, কাউন্সিলর সিকিম সিনহা, সিদ্ধার্থ রায়, অনিমা মালাকার সহ একাধিক পুর আধিকারিক ও প্রকৌশলীরা সোনামুখীতে নির্মিত বর্জ্য পৃথকীকরণ কেন্দ্র (টার্সিয়ারি সেন্টার) পরিদর্শনে যান। প্রায় দুই বছর আগে এই সেন্টার তৈরি হলেও এখনও পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি। চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায় বলেন,”যান্ত্রিক ত্রুটি ও দক্ষ কর্মীর অভাবে পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি বর্জ্য পৃথকীকরণ কেন্দ্রটি। তবে আমরা বসে নেই। প্রতিদিনকার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পুরসভা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।কৈলাসহর পুর পরিষদ শহরের প্রতিটি বাড়ি থেকে প্রতিদিন বর্জ্য সংগ্রহ করছে। তবে নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। সবাই যদি ভেজা ও শুকনো বর্জ্য আলাদা করে রাখেন, তাহলে সেই বর্জ্য পৃথকীকরণ অনেক সহজ হয়।”
পরিদর্শনে থাকা কাউন্সিলর সিকিম সিনহা জানান,”বর্তমানে প্রায় ২০ জন শ্রমিক প্রতিদিন হাতে করেই বর্জ্য পৃথক করছেন। যদি ট্রমেল মেশিন পুরোপুরি চালু হয়, তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে এবং ল্যান্ডফিলে বর্জ্যের চাপ অনেকটাই কমবে। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও হ্রাস পাবে।বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং অ-পুনর্ব্যবহারযোগ্য শ্রেণিতে ভাগ করে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করাই আমাদের লক্ষ্য। এতে পরিবেশ যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি শহর পরিচ্ছন্ন থাকবে।”
পুরসভা আগে শান্তিপুরের নটিংছড়ায় অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন তৈরি করেছিল, কিন্তু স্থানীয় বিরোধ ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে সেখান থেকেও সরে আসতে হয়। বর্তমানে বর্জ্য মূলত টার্সিয়ারি সেন্টারেই ফেলা হচ্ছে, কিন্তু হাসপাতালের সংবেদনশীল বর্জ্য নিয়ে বড় সমস্যায় রয়েছে পুর পরিষদ।
চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায় বলেন,”হাসপাতালের বর্জ্য ফেলার উপযুক্ত স্থান এখনও নেই। আমরা বিকল্প জায়গা খোঁজার কাজ শুরু করেছি। তবে শহরকে পরিষ্কার রাখতে হলে একমাত্র উপায় সকলের সহযোগিতা। প্রশাসনের একার পক্ষে সব কিছু সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। টার্সিয়ারি সেন্টার পুরোপুরি সচল হতে প্রয়োজন অন্তত ছয় মাস। ততদিন নাগরিকদের সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।