
oplus_0
সংবাদ প্রতিনিধি। অনুপম পাল। কৈলাসহর
বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক কাছাড়িবাড়ি “রবীন্দ্র স্মৃতি যাদুঘর”-এ ধর্মীয় মৌলবাদীদের দ্বারা চালানো ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবার কৈলাসহরে অনুষ্ঠিত হল প্রতিবাদ মিছিল ও সভা। এই কর্মসূচির আয়োজন করে ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্র, কৈলাসহর মহকুমা কমিটি।
প্রতিবাদ মিছিলটি বিকেলে কৈলাসহর প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে কৈলাসহর পুর পরিষদের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়, যার সভাপতিত্ব করেন বরিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বিমান দাম।
সভায় ধর্মীয় উগ্রতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন সংস্কৃতি কর্মী বৈশম্পায়ন চক্রবর্তী। প্রতিবাদ সংগীত পরিবেশন করেন হিল্লোলি দাম ও সুস্মিতা হালদার।
এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের সদস্য প্রলয়েন্দু চৌধুরী বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধুমাত্র বাংলা সাহিত্যের নন, তিনি মানবতার কবি। তাঁর স্মৃতি ভাঙচুর করা মানে গোটা বাঙালি জাতিসত্তার ওপর আঘাত হানা। এটি নিছক একটি স্থাপনার ক্ষতিসাধন নয়, বরং আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনায় আঘাত। আমরা ত্রিপুরা থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ‘রাখীবন্ধন’ উৎসবের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের বার্তা দিয়েছিলেন। আজকের ঘটনা সেই ঐতিহ্যেরও অবমাননা। ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের মানুষ ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছিল, অথচ আজ বাংলা ভাষার প্রধান কবির স্মৃতিচিহ্ন নিরাপদ নয় — এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
প্রলয়েন্দু চৌধুরী আরও বলেন, “রবীন্দ্রনাথ বরাবর যুদ্ধবিরোধী ছিলেন। আজ যখন সারা বিশ্ব তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় কাঁপছে, তখন রবীন্দ্র ভাবনার মানবতাবাদই আমাদের পথ দেখাতে পারে। তাই আমরা কেবল রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিভঙ্গের প্রতিবাদ নয়, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও হিংসার রাজনীতিরও বিরোধিতা করছি।”