
Oplus_0
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
ত্রিপুরা রাজ্যের ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমায় উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায় সূচিত হলো মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. মানিক সাহার হাত ধরে। রাজস্ব দপ্তরের অর্থায়নে এবং গ্ৰামোন্নোয়ন দপ্তরের তত্ত্বাবধানে, কুমারঘাট মহকুমা শাসকের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এই গুচ্ছ প্রকল্পের পথচলা। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে, ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় কুমারঘাটের গীতাঞ্জলি অডিটোরিয়ামে।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী স্বান্তনা চাকমা, বিধায়ক ভগবান দাস, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব ডঃ কে. শশী কুমার, ঊনকোটি জেলার জেলা শাসক ও সমাহর্তা তমাল মজুমদার এবং জেলা পুলিশ সুপার সুধান্বিকা আর। অনুষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে স্মরণ করে গাছ লাগানোর মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তাও তুলে ধরা হয়।
এই প্রকল্পের অন্তর্গত উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন মৌলিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন। কুমারঘাট ও পেঁচারথল ব্লকের অন্তর্গত মোট ১৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে—শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ।সোনাইমুড়ী, সায়দাবাড়ী, বেতছড়া ও দেওভ্যালী এলাকায় হেলথ সাব-সেন্টারের নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় প্রায় ১.২০ কোটি টাকা। রতিয়াবাড়ীতে ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আরসিসি ফুট ব্রিজ নির্মাণ।মাছমারা এলাকায় তহশিল কাচারির নতুন ভবন নির্মাণ।উত্তর-পূর্ব কাঞ্চনবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ, ভাটি দুধপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সায়েন্স ল্যাব ও আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট রুম নির্মাণ।বেতছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয় পেঁচারথলে নবনির্মিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, যেখানে ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।সাধুচন্দ্র ও সেবাচন্দ্র পাড়ায় পিএম জনমন প্রকল্পে মাল্টিপারপাস সেন্টার নির্মাণ।পেঁচারথল ফায়ার স্টেশন এলাকায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকায় নতুন ভবন নির্মাণ।
সব মিলিয়ে ২০ কোটি ৩৯ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে এবং ৬ কোটি ১১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকার ব্যয়ে নির্মিত দশটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।
এই সমারোহে গীতাঞ্জলি অডিটোরিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রতিফলিত হয় পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সর্বাঙ্গীন উন্নয়নের সংকল্প। তিনি উল্লেখ করেন, আবাস যোজনা, পানীয় জল, স্বাস্থ্য, রাস্তা, আইটি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আমার সরকার” পোর্টাল এখন জাতীয় স্তরেও প্রশংসিত।
বিধায়ক ভগবান দাস জানান, ডাবল ইঞ্জিনের সরকারে পাবিয়াছড়া ব্লক উন্নয়নের চতুর্গুণ গতি পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিদেশ থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য এনে সাধারণ মানুষকে ভুল পথে চালানো যুক্তিসঙ্গত নয়। বরং মোদীজির “এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত” অঙ্গীকারে ত্রিপুরা এগিয়ে চলেছে আত্মবিশ্বাসের সাথে।
আইন শৃঙ্খলা, পার কেপিটা ইনকাম ও স্বাস্থ্য পরিসেবায় রাজ্য ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রথম সারিতে। কৈলাশহর বিমানবন্দর পুনরায় চালুর পরিকল্পনা, খোয়াই ও কমলপুর বিমানবন্দর সক্রিয় করার উদ্যোগ ত্রিপুরাকে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো সংযুক্ত করবে।