
প্রতিনিধি, অনুপম পাল,কৈলাসহর
বিশ্ব শান্তি ও সার্বিক মঙ্গল কামনায় আজ ধর্মনগরে সমাপ্তি হল এক বিশেষ ‘ধম্মযাত্রা’র। ২৬শে মে আন্তর্জাতিক মৈত্রী সেতু, সাবরুম থেকে শুরু হওয়া এই আধ্যাত্মিক পদযাত্রা শেষ হল ৬ জুন, উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরে। দীর্ঘ এই যাত্রাপথে অংশগ্রহণ করেন ৩০ জন বৌদ্ধ ভিক্ষু, যাঁদের মধ্যে ১৩ জন থাইল্যান্ড থেকে আগত। তাঁদের এই যাত্রার মূল বার্তা— “যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই”।
আন্তর্জাতিক বৌদ্ধিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল বুদ্ধিস্ট কনফেডারেশন (IBC)-এর সাধারণ সম্পাদক ভি. কে. ভিক্ষু সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানান, এই ধম্মযাত্রা মানবজাতির প্রতি এক শান্তিপূর্ণ আহ্বান। তিনি বলেন, “আজকের বৈষয়িক সংঘর্ষপূর্ণ সমাজে, এমন ধরণের আধ্যাত্মিক পদক্ষেপই পারে মানুষকে শুদ্ধতা ও সহমর্মিতার পথে পরিচালিত করতে।”
যাত্রাটি মনু, বান্দরঘাটা হয়ে উত্তর ত্রিপুরা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। পথে পথে তাঁরা ধ্যান, প্রার্থনা ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেন সাধারণ মানুষের মধ্যে। বর্ণাঢ্য পোশাকে সুসজ্জিত ভিক্ষুগণ হাতে ভারতের জাতীয় পতাকা ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রতীক পতাকা নিয়ে শান্তিপূর্ণ সংগীত ও মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে এই যাত্রা সম্পন্ন করেন।
স্থানীয়দের মধ্যে ছিল ব্যাপক উৎসাহ। ধর্মনগরের বিভিন্ন মোড়ে ও এলাকায় সাধারণ মানুষ ফুল, পুষ্পস্তবক, জল ও ফল দিয়ে ভিক্ষুদের অভ্যর্থনা জানান। অনেকেই তাঁদের সঙ্গে শান্তির মন্ত্রে সুর মেলান। শিশু, বৃদ্ধ, যুবক—সব বয়সের মানুষই ধম্মযাত্রার অংশীদার হয়ে ওঠেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মগুরু ও সমাজকর্মী। তাঁদের মতে, “এই ধম্মযাত্রা শুধুই একটি ধর্মীয় আয়োজন নয়, বরং এটি মানবতার প্রতি এক উদাত্ত আহ্বান—যেখানে ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে শান্তি, সহানুভূতি ও মমত্ববোধই মুখ্য। এমন পদক্ষেপ সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবেই।”