
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
উত্তর জেলার চুরাইবাড়ি থানা এলাকার উত্তর ফুলবাড়ি গ্রামে ফের চরম দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা। এবারও মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে, গলায় ছুরি ধরে দিব্যি চালিয়ে গেল লুটপাট—নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল কিছুই বাদ গেল না। অন্ধকার রাতে ঘরে বসে থাকা মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
বুধবার রাত আনুমানিক একটা নাগাদ পাঁচজনের এক সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল ঢুকে পড়ে অমিত পালের বাড়িতে। টিভি দেখতে বসা অবস্থায় হঠাৎ বাইরের শব্দে দরজা খুলতেই চোরের দল হঠাৎ হানা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে তাকে ফেলে দেওয়া হয় মাটিতে—মাথায় বন্দুক, বুকে ছুরি। চিৎকার করলেই মৃত্যু নিশ্চিত—এ হুমকির মধ্যেই তাকে এবং তার বৃদ্ধা মা রিতা পালকে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করা হয়।
এরপরই শুরু হয় লুটপাট। ঘর থেকে তুলে নেয় নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার (দুটি চুরি, দুটি মিনি বাউটি, একটি আংটি), ও তিনটি দামি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। পুরো দলটির মুখে ছিল মাঙ্কি টুপি, শরীরে গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট—মাত্র একজনের পরনে ছিল ফুল প্যান্ট।
একটি শান্ত গ্রামের বুকে এমন এক ভয়ংকর অপরাধ শুধু আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি নয়, গোটা সমাজের জন্যই এটি একটি সতর্ক সংকেত। মানুষের জান-মাল আজ আর নিরাপদ নয় নিজ ঘরের চৌহদ্দিতেও। চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে—কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই দুষ্কৃতীদের এমন সংগঠিত হামলার পেছনে কি কোনও বড় চক্র কাজ করছে?
একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি উত্তর জেলার জন্য এখন নতুন কিছু নয়। দিনের পর দিন এমন অস্ত্রধারী লুটের ঘটনা প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং গোয়েন্দা তৎপরতার দুর্বলতারই প্রমাণ বহন করছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ রাতে ঘুমোবে কীভাবে?
স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানিয়ে বলেন, দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হউক।যাতে করে এমন অপরাধ যাতে আর না ঘটে। তাদের দাবি তার জন্য কঠোর নজরদারি এবং পাড়ায়-পাড়ায় পুলিশি টহল জোরদার করা হোক। না হলে এই এলাকাগুলো অচিরেই অপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হবে, আর সাধারণ মানুষ—তাদের জন্য শুধু আতঙ্কই থাকবে সঙ্গী।