
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
রঙে রঙে মাখো প্রাণ,
ভুলে যাও সব অভিমান।
আবীর ছুঁয়ে বলো হেসে,
ভালোবাসা রইলো শেষে।
বসন্তের মৃদুমন্দ হাওয়ায়, কোকিলের কূজন আর পলাশ-শিমুলের রাঙা রঙে প্রকৃতি যেন আপন খেয়ালে সেজে ওঠে। এই রঙিন ঋতুর আনন্দে মেতে ওঠে হৃদয়, আর সেই আনন্দের অপরিহার্য সঙ্গী দোল উৎসব। শুধুই কি রং? না, দোল উৎসব মানে আনন্দ, দোল উৎসব মানে ভালোবাসার বিস্তার, উল্লাসের মিছিল, রঙের পরশে মলিনতাকে মুছে ফেলার এক অপরূপ আয়োজন।
দোল পূর্ণিমার দিনটি শুধু রঙ খেলার উৎসব নয়, এটি এক ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বুননের গল্প। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলা, রাধার সাথে প্রেমের রঙে রাঙা মুহূর্ত, প্রহ্লাদের ভক্তির জয়গান—এইসবই একাকার হয়ে গড়ে তোলে দোলযাত্রার মহিমা। কৃষ্ণ যেমন অশুভের বিরুদ্ধে শুভশক্তির পতাকা ওড়ান, তেমনই দোল উৎসব আমাদের শেখায় সকল বিভেদ ভুলে, ঘৃণা-বিদ্বেষ দূরে ঠেলে ভালোবাসার রঙে জীবনকে রাঙিয়ে নিতে।
শিশুর হাসির মতোই নিষ্পাপ এই রঙিন আয়োজন। একমুঠো আবীর ছুঁয়ে গেলে যেন মনও রঙিন হয়ে ওঠে। পিচকারির ফোয়ারায় মিশে যায় সব ক্লান্তি, জীবনের গতি হয়ে ওঠে প্রাণোচ্ছল। হিন্দুধর্মের পার্বণ হলেও, এই উৎসব ধর্মের গণ্ডি ছাপিয়ে ছুঁয়ে যায় সর্বজনীন আনন্দের দিগন্তকে।
আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা যখন একাকীত্বের দেয়াল গড়ে তুলি, তখন দোল উৎসব আমাদের মনে করিয়ে দেয়—সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে হাসলে, জীবন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। এই দিনটি আমাদের শেখায়, রঙ যেমন গায়ের গায়ে লাগে, তেমনি মানুষের হৃদয়েও রঙ লেগে যায়। তাই আসুন, সব গ্লানি ধুয়ে দিই, হিংসা-বিদ্বেষের শিকল ভেঙে দিই, রঙের উৎসবে মিশে যাই একসাথে।