
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “জীবন ধারণের অর্থই হলো অন্যের সেবা করা।” এই মহান বাণীকে পাথেয় করেই ঊনকোটি জেলা শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে কৈলাসহরে পিএমশ্রী রাধাকিশোর ইন্সটিটিউশনে আয়োজিত হলো এক মহতী রক্তদান শিবির। রাজ্য সরকারের সমাজ শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে শিবিরের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার, জেলা শাসক দীলিপ কুমার চাকমা, পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীতিশ বিশ্বাস, ঊনকোটি জেলা পরিষদের সদস্য বিমল কর এবং কৈলাসহর ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনুপম পালসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঊনকোটি জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার রক্তদানের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “রক্তদান শুধু একজন ব্যক্তির জীবন বাঁচানোর উপায় নয়, এটি মানবিকতার এক অনন্য প্রকাশ। আমাদের সমাজের প্রত্যেক সদস্যের উচিত, বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজের, এই মহৎ কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শুধু শিক্ষাদানের কেন্দ্র নয়, বরং সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রও বটে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্ব শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের প্রতি তাঁদের এক বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবতার বীজ বপন করতে হলে শিক্ষকদেরই উদ্যোগ নিতে হবে।”
মন্ত্রী টিংকু রায় তাঁর বক্তব্যে বলেন, “প্রতিটি রক্তদান একেকটি প্রাণ বাঁচানোর সমতুল্য। যারা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন, তারা প্রকৃত অর্থে মানবতার সেবায় নিয়োজিত। রাজ্য সরকার সবসময়ই এই ধরনের মহতী উদ্যোগকে উৎসাহিত করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকারা যদি এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা নেন, তবে শিক্ষার্থীরাও সমাজসেবায় উদ্বুদ্ধ হবে এবং ভবিষ্যতে দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
শিক্ষা কেবলমাত্র পুঁথিগত জ্ঞানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো সামাজিক উন্নয়ন এবং মানবসেবার মনোভাব তৈরি করা। এই রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে শিক্ষা দপ্তর দেখিয়ে দিল যে শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সামাজিক দায়িত্ববোধের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় শিক্ষার্থীরা যদি ছোটবেলা থেকেই মানবসেবার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়, তবে ভবিষ্যতে একটি উন্নত ও মানবিক সমাজ গড়ে ওঠবে।
এই মহতী উদ্যোগ শুধু রক্তদান শিবির নয়, এটি এক সামাজিক আন্দোলন, যা শিক্ষার আলোকে মানবসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে। শিক্ষকদের পথনির্দেশনায় ছাত্রসমাজ যদি এই মানবিক কাজে অংশ নেয়, তবে ভবিষ্যতে আমাদের সমাজ আরও উদার ও সহমর্মী হয়ে উঠবে।
আজকের এই রক্তদান শিবিরে মোট ৫৮ জন রক্তদাতা রক্তদান করেন। যার মধ্যে ৮ জন মহিলা রক্তদাতা ছিলেন।