প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
রাজ্যের প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম কৈলাসহর রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ বছর উদযাপন করছে তার ৭৫ তম বর্ষ — প্লাটিনাম জয়ন্তী। দীর্ঘ শিক্ষাধারার এই ঐতিহ্যকে স্মরণীয় করে তুলতে নয় দিনের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এই উপলক্ষে আজ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তথা প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান অসীম চক্রবর্তী, কনভেনার অরুণ সাহা, যুগ্ম কনভেনার উত্তম দাস, কালচারাল কমিটির কনভেনার শুভাশিস চৌধুরী, রিসেপশন কমিটির কনভেনার সঞ্জীব চৌধুরী সহ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও এলামনি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
প্রধান শিক্ষক অসীম চক্রবর্তী জানান, ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয় সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। এবারে প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে এক বিশেষ কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। মূল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ১ ডিসেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, তবে আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে ২৯ নভেম্বর থেকে।
উদযাপন কমিটির কনভেনার অরুণ সাহা ও যুগ্ম কনভেনার উত্তম দাস জানান, ২৯ নভেম্বর বিদ্যালয়ের ময়দান থেকে শহর জুড়ে এক “ইউনিটি র্যালি”র আয়োজন করা হবে। পরদিন ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এক বর্ণাঢ্য ট্যাবলু র্যালি, যেখানে বিদ্যালয়ের ইতিহাস ও গৌরব তুলে ধরা হবে। ১ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে প্লাটিনাম জয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা এবং যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক সম্মতি মেলেনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের প্রয়াত ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মাননা প্রদান করা হবে। একইদিন রাতে রাজ্যের জনপ্রিয় শিল্পী নিহারিকা নাথ সংগীত পরিবেশন করবেন।৩ ডিসেম্বর বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত হবে মেগা রক্তদান শিবির। ৪ ডিসেম্বর মঞ্চ মাতাবেন শিল্পী বিনোদ রাঠোর, আর ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে সুরের জাদু ছড়াবেন জনপ্রিয় গায়ক রাজ বর্মন। এছাড়াও প্রতিদিনই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে রাজ্য ও বহিরাজ্যের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সকল প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের এই মহা উৎসবে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক অসীম চক্রবর্তী বলেন,“প্রাক্তন ছাত্রদের সহযোগিতা ছাড়া এই বিশাল আয়োজন সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয়। আমরা চাই রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবারও এক পরিবারের মতো একত্র হোক, সেই পুরনো স্মৃতিগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য।”
কৈলাসহরের এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন নিঃসন্দেহে শহরের শিক্ষা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় হয়ে থাকবে।