
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
কৈলাসহর আইটিআই কমপ্লেক্স ময়দানে ১০ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে রাজ্য ভিত্তিক হ্যান্ডলুম এক্সপো মেলা, যা উদ্বোধন করেন ত্রিপুরা সরকারের সমাজ শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঊনকোটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবস্বর আলী, কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়, সমাজসেবক বিমল কর, এবং ঊনকোটি জেলা শাসক দিলীপ কুমার চাকমা সহ অন্যান্যরা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, ত্রিপুরার হ্যান্ডলুম শিল্প দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী শিল্প। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ত্রিপুরার সিল্ক শাড়ি ও মনিপুরী হ্যান্ডলুম শিল্পের উৎকর্ষতা। তাঁর মতে, মনিপুরী সম্প্রদায়ের হ্যান্ডলুম শিল্পীরা অত্যন্ত দক্ষ, এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য দেশের বাজারে আরও প্রসারিত করা উচিত। তিনি হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরকে পরামর্শ দেন শিল্পীদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে শিল্পের প্রসারে আরও জোর দিতে।
মন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী হ্যান্ডলুমকে পর্যটনের সঙ্গে সংযুক্ত করা দরকার। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, ত্রিপুরার বিখ্যাত মা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির। অনেক পর্যটক এবং ভক্ত মন্দির থেকে উপহার হিসেবে হ্যান্ডলুম সামগ্রী নিয়ে যান। একইভাবে, শৈব তীর্থ ঊনকোটি-কে হ্যান্ডলুম শিল্পের মাধ্যমে নতুন মাত্রা দেওয়া সম্ভব। শৈব তীর্থ ঊনকোটিকে হ্যান্ডলুম সামগ্রী প্রস্তুত ও বাজারজাত করলে তা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হবে এবং উপহার হিসেবে বিশেষ স্বীকৃতি পাবে।
এই মেলায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৬টি, মণিপুর থেকে ৫টি এবং ত্রিপুরার বিভিন্ন জেলা থেকে ৫১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে। স্টলগুলোতে রয়েছে—ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়ি,নকশিকাঁথা,মাটির শিল্প,কাঠ ও ধাতুর কারুকাজ,রেশম বস্ত্র ইত্যাদি।
এছাড়াও, মেলায় প্রদর্শিত সুক্ষ্ম কারুকাজ করা পোশাক ও গৃহসজ্জার সামগ্রী বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। মন্ত্রী বলেন, “এটি শুধু কেনাকাটার জায়গা নয়, বরং আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।” রাজ্য সরকার হ্যান্ডলুম শিল্পের উন্নতির জন্য বেশ কিছু বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে আগামীতে আরো নেবে। তিনি বলেন, শিল্পীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও সহজলভ্য অর্থায়নের মাধ্যমে ত্রিপুরার হ্যান্ডলুম শিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
স্থানীয় শিল্পীদের উৎসাহিত করতে ও তাঁদের তৈরি পণ্য বাজারজাত করতে এ ধরনের মেলা নিয়মিত আয়োজন করা হবে বলেও তিনি বলেন।