
✍️ অনুপম পাল,কৈলাসহর
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্যের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সাহিত্যকর্মে মানুষের মনন, জীবনের চিরন্তন সংগ্রাম এবং সমাজের অসামঞ্জস্য ফুটে উঠেছে অসামান্য দক্ষতায়। ১৯৩৮ সালের ১৬ জানুয়ারি, বাংলা সাহিত্য হারিয়েছিল এই অমর কথাশিল্পীকে। তার প্রয়াণ দিবসে আমরা শ্রদ্ধা জানাই সেই মহান সাহিত্যিককে, যিনি তার লেখনীর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিলেন।
শরৎচন্দ্রের সাহিত্য জীবনের প্রতিটি দিককে স্পর্শ করেছে। তার উপন্যাসগুলোতে স্থান পেয়েছে সমাজের প্রান্তিক মানুষ, বিশেষ করে নারীর অবস্থান, তার অধিকার, প্রেম, এবং ত্যাগ। “দেবদাস”, “শ্রীকান্ত”, “চরিত্রহীন”, “বিন্দুর ছেলে” ইত্যাদি কালজয়ী রচনাগুলি আজও পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। তার প্রতিটি চরিত্র জীবন্ত, বাস্তব ও হৃদয়গ্রাহী।
নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় আচরণ এবং তাদের অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে তিনি বারবার কলম ধরেছেন। তার সাহসী লেখনী শুধু সাহিত্য নয়, সমাজের পরিবর্তনেও ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে তিনি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন, আবেগ ও সংগ্রামকে এমনভাবে চিত্রিত করেছেন যা বাঙালির জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে।
শরৎচন্দ্রের লেখনী শুধু বাংলা সাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; তা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে তার সাহিত্যিক প্রতিভার স্বীকৃতি মিলেছে। তার গল্প ও উপন্যাস বারবার নাটক, চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনে পুনর্জন্ম লাভ করেছে, যা তার কালজয়ী প্রতিভার প্রমাণ।
আজ তার প্রয়াণ দিবসে আমরা শুধু তাকে স্মরণ করছি না, বরং তার সৃষ্টিকে আবার নতুন করে অনুভব করছি। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শুধুমাত্র এক কথাশিল্পী নন, তিনি আমাদের সমাজের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তার সাহিত্য আমাদের কাছে এক অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস।