
প্রতিনিধি কিশোর রঞ্জন হোড়,ধর্মনগর
পাঁচ আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পর প্রাণ বাঁচাতে ভারতের মাটিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন এক বাংলাদেশী নাগরিক। সাড়ে ছয় মাস আত্মগোপনের পর অবশেষে ত্রিপুরার ধর্মনগর আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনাল থেকে তাকে আটক করেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (BSF)। পরবর্তীতে তাকে কদমতলা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ধৃত বাংলাদেশী শেখ মোহাম্মদ রোখন মিয়া (৪০), বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার গৌরিশঙ্কর থানার পোষাইনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের সময় দালালের মাধ্যমে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেন। ব্রজেন্দ্র নগর সীমান্ত পার হয়ে তিনি প্রথমে ধর্মনগরে কিছুদিন অবস্থান করেন এবং পরে আসামের পাথারকান্দি এলাকায় আত্মগোপন করেন। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তিনি পাথারকান্দিতে বসবাস করছিলেন।
ঈদের দিন তিনি ধর্মনগরে কাজের সন্ধানে আসেন, কিন্তু সফল না হয়ে ফের পাথারকান্দি ফিরে যাবার পরিকল্পনা করেন। তবে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জি ব্রাঞ্চের জোয়ানরা ধর্মনগর আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনাল থেকে তাকে আটক করে।
ধৃত ব্যক্তিকে মঙ্গলবার রানীবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্পের ৯৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের জোয়ানরা কদমতলা থানায় হস্তান্তর করে। কদমতলা থানার সাব-ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্তকারী অফিসার তপন দাস জানান, রোখন মিয়ার বিরুদ্ধে ২৩/২০২৫ নম্বরে ১৪৩(২) বিএনএস ২০২৩ এবং ১৯৬৭ সালের পাসপোর্ট আইনের ৩/১২(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, তিনি মানব পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন, যার ফলে আরও দুই ভারতীয় নাগরিককেও আটক করা হয়েছে।
আটকের পর নাটকীয়তা
বিএসএফ বিভিন্ন থানায় ধৃত বাংলাদেশীকে হস্তান্তরের চেষ্টা করলেও প্রথমে কেউ গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। অনেক আলোচনা ও নাটকীয়তার পর কদমতলা থানার পুলিশ অবশেষে তাকে গ্রহণ করে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে।
এই ঘটনার ফলে সীমান্ত নিরাপত্তা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছে।