
Oplus_0
সংবাদ প্রতিনিধি। অনুপম পাল। কৈলাসহর
ত্রিপুরা সরকারের অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগে চন্ডিপুর ব্লকের অন্তর্গত বিলাসপুর গ্রামের সিঙ্গেরি বালাজি মন্দির ও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ সাক্ষী রইল একটি গুরুত্বপূর্ণ সচেতনতামূলক কর্মসূচির। ‘ধরতি আবা জন ভাগীদারি অভিযান’-এর অঙ্গ হিসেবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল পরিসংখ্যানভিত্তিক সরকারি পরিষেবাসমূহের উপকারিতা সম্পর্কে জনসাধারণ, বিশেষত উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিকল্পনা (পরিসংখ্যান), জনজাতি কল্যাণ, হস্ততাঁত, হস্তশিল্প ও রেশম শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্র, ডিরেক্টর দয়ানন্দ রিয়াং, ঊনকোটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, চন্ডিপুরের এমডিসি বিমল কান্তি চাকমা এবং জেলা শাসক তমাল মজুমদার।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় একটি রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে। এরপর একে একে সচেতনতামূলক আলোচনা শুরু হয়। মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজও বহু উপজাতি নাগরিক নথিপত্রের অভাবে সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের কল্যাণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার একযোগে কাজ করছে।” তিনি জানান, ধরতি আবা অভিযান এই ব্যবধান ঘোচানোর এক বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।
জেলাশাসক তমাল মজুমদার বলেন, এই অভিযানের মাধ্যমে ২১টি হ্যাবিটেশনে ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে অন্তর্ভুক্ত করে বিভিন্ন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পরিচয়পত্র, বাসস্থানের নথি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুবিধা—সবটাই এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্র বলেন, “সিঙ্গেরি বালাজি মন্দির কেবল ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং এখন তা সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অনন্য স্থান হয়ে উঠেছে। এখান থেকেই আমরা উন্নয়নের একটি অংশগ্রহণমূলক রূপরেখা গড়ে তুলতে পারি।”
অনুষ্ঠানে স্থানীয় স্ব-সহায়ক দলের সদস্যরা অতিথিদের হাতে হাতে তৈরি উপহারসামগ্রী তুলে দেন। এই আন্তরিকতা উপস্থিত সকলকে অনুপ্রাণিত করে।কর্মসূচিতে পরিসংখ্যানের কার্যকারিতা, সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণে তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনার ভূমিকা এবং তথ্য সংগ্রহের সঠিক পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সচেতনতা যেমন বাড়ে, তেমনি সরকারের কর্মকাণ্ডে আস্থা ও সম্পৃক্ততাও জোরদার হয়।অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ উপজাতি জনগণের উন্নয়নে শুধু সহায়ক নয়, এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করছে—যেখানে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতার বন্ধন আরও দৃঢ় হচ্ছে।