
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
কৈলাসহরের পাখিরবাদা গ্রামের শিক্ষিকা রুখিয়া বেগমের উপর নারকীয় অত্যাচারের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল জলালকে অবশেষে গ্রেফতার করলো পুলিশ। গোপন সূত্রের ভিত্তিতে ১২ মার্চ ২০২৫ রাত ১০:৩০ মিনিটে কৈলাসহর মহিলা থানার ওসি রিপিতা ভট্টাচার্য্যের নেতৃত্বে কুবঝার এলাকার ভাঙ্গার পুল এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্ত জলালকে গ্রেফতারের সময় সে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়, এতে কনস্টেবল নমিতা নম কিছুটা আহত হন। তবে পুলিশের বুদ্ধিমত্তা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় অভিযুক্তকে আটক করা সম্ভব হয়। রাত ১১:২০ মিনিটে তাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। কৈলাসহর মহিলা থানার ওসি রিপিতা ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, ১৩ মার্চ ২০২৫ সকালে জলালকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তার বিরুদ্ধে বিএনএস 2023-এর 109/118(2)/351(3)/318(2) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ উল্লেখ্য যে,সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা রুখিয়া বেগম ভালোবেসে আব্দুল জলালকে বিয়ে করলেও তা পরিণত হয় ভয়াবহ অভিজ্ঞতায়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই জলালের আসল রূপ প্রকাশ পায়। জানা যায়, এর আগেও তার দুটি বিয়ে হয়েছিল এবং চার-পাঁচটি সন্তানও রয়েছে। প্রতারণার শিকার হয়ে রুখিয়া গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন। এরপর থেকেই তিনি তার স্বামীর হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে জলাল তার স্ত্রীর ওপর ধারালো দা নিয়ে আক্রমণ করে, মাথায় গুরুতর আঘাত করে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে রুখিয়ার মাথায় আটটি সেলাই লাগে। পরে তার বাবা কৈলাসহর মহিলা থানায় এফআইআর দায়ের করেন।
চিকিৎসার পর ৩ মার্চ রুখিয়া স্কুলে যোগ দিলেও জলালের হুমকি বন্ধ হয়নি। একাধিকবার ফোনে হুমকি দেওয়ার ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা রুখিয়া একেকদিন একেক জায়গায় লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হন।
অবশেষে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার ফলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। রুখিয়ার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের এই পদক্ষেপে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন এবং দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন।