
প্রতিনিধি অনুপম পাল। কৈলাসহর
আসন্ন শারদোৎসবকে সামনে রেখে ঊনকোটি জেলার শ্রীরামপুর ও কৈলাসহরে দেখা গেল এক অনন্য সমাজসেবামূলক আবহ। আজ শ্রীরামপুর নেতাজি শিক্ষা নিকেতন ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রাঙ্গণে এবং কৈলাসহর বাজার মণ্ডপে আয়োজন করা হলো দুটি মহতী রক্তদান শিবির।
শ্রীরামপুরের ঐতিহ্যবাহী ওয়েস্ট কৈলাসহর ক্লাব তাদের ৫৬তম দুর্গোৎসব উপলক্ষে এদিনের রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। দিনের সূচনা হয় পুজো মণ্ডপের খুঁটি পূজার মাধ্যমে। খুঁটি পূজা শেষে ক্লাব সদস্য, শুভানুধ্যায়ী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা রক্তদান শিবিরে অংশ নেন। সকাল থেকেই শিবিরে দেখা যায় ব্যাপক উৎসাহ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বহু মানুষ এগিয়ে আসেন রক্তদান করতে। ক্লাবের কর্মীরা জানান, শুধুমাত্র দুর্গোৎসবের মধ্যেই নয়, সারা বছর ধরে তারা সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে পাশে থাকেন সাধারণ মানুষের। জেলার ও মহকুমার হাসপাতালে রক্ত সংকট মেটাতে এই আয়োজন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। অতীতেও বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে কোভিড মহামারীতে ত্রাণ বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ও জনসচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ক্লাব।
অন্যদিকে, কৈলাসহরের ঐতিহ্যবাহী গণেশ পূজা উপলক্ষে পানিচৌকি বাজার গণেশ পূজা কমিটিও রক্তদান শিবির আয়োজন করে। পূজা কমিটির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই একাধিক সমাজসেবামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, যার অংশ হিসেবেই আজকের এই রক্তদান শিবির। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কমিটির কোষাধ্যক্ষ আশীষ বিশ্বাস, বরিষ্ঠ সদস্য মন্টু রায়, ইন্দ্রজীত পালসহ অন্যান্যরা। বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইন্দ্রজীত পাল বলেন—“আমাদের পূজা কমিটি শুধু পূজা আয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতাকেও সমান গুরুত্ব দেয়। রক্তদান এক মহৎ কাজ, এর মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব।”
শ্রীরামপুর ও কৈলাসহরের এই দুটি রক্তদান শিবির কেবল রক্ত সংকট মেটানোর প্রয়াসই নয়, বরং উৎসবের আবহে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতারও উজ্জ্বল নিদর্শন। দুটি শিবির থোকে মোট ৫১ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। স্থানীয় মানুষদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রমাণ করে দিয়েছে—শারদোৎসব আজ কেবল আনন্দ-বিনোদনের উৎসব নয়, বরং মানবিকতার বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছে সমানভাবে।