
Oplus_0
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানেই জ্ঞানের চর্চাস্থল, চরিত্র গঠনের পীঠস্থান। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ে সেই পবিত্র শিক্ষাক্ষেত্রকে ঘিরেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছে একটি পরিচিত দুষ্টচক্র, যারা ভর্তির মরশুমকে কাজে লাগিয়ে নতুন ছাত্রীদের কাছ থেকে ‘সাংস্কৃতিক ফি’-র নামে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ে লিপ্ত হয়েছে।
গত বেশ কিছুদিন ধরে রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা নবাগত ছাত্রীদের কাছ থেকে কিছু ছাত্র ‘সাংস্কৃতিক ফি’ নামে প্রতি ছাত্রী পিছু ১০০ টাকা করে আদায় করে চলেছে। শুধু তাই নয়, টাকা আদায়ের প্রক্রিয়ায় যাতে ছাত্রীরা সন্দেহ না করে, সেজন্য কলেজের নাম ও লোগো ছাপা রসিদ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, পুরো বিষয়টি যেন প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত ফি বলেই মনে হয়—এই উদ্দেশ্যেই সাজানো হয়েছিল এই প্রতারণার ফাঁদ। সুত্র মারফত খবর পাওয়া গেছে যে ১০০ টাকা করে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে গত কিছুদিনে তার পরিমাণ প্রায় লক্ষটাকা।
বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে সম্প্রতি। সঙ্গে সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষ নোটিশ বোর্ডে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, “কলেজ কর্তৃপক্ষ সাংস্কৃতিক ফি বা এই ধরণের কোনও অর্থ আদায়ের অনুমতি দেয়নি, এমনকি এ ধরনের রসিদ ছাপাও হয়নি। কেউ যদি কলেজের নাম ও লোগো ব্যবহার করে টাকা আদায় করে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি।”এই পরিষ্কার বার্তার পর ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
তবে, এই ঘটনা নতুন নয়। প্রতিবছর ভর্তির সময়ে এক বিশেষ ছাত্র সংগঠনের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু দুষ্টচক্র এ ধরনের অর্থ আদায়ে মেতে ওঠে বলে অভিযোগ। বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও এমন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়। সে সময় এমন অর্থ আদায় ঘিরে ছাত্র সংগঠনের মধ্যে রীতিমতো সংঘর্ষ হয়, যার জেরে আহত হন উভয় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের একাধিক সদস্য।
বর্তমানে বিগত আট বছর ধরে একতরফাভাবে একটি ছাত্র সংগঠন কলেজের ছাত্র রাজনীতিতে আধিপত্য বজায় রেখেছে। যদিও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, তবুও অনৈতিক অর্থ আদায়ের মতো ঘটনা যে শিক্ষার পরিবেশকে কলুষিত করছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল ও সাধারণ নাগরিকরা।
এখন দেখার বিষয়, কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র নোটিশ দেওয়ায় সীমাবদ্ধ থাকে, না কি পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে।