
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
আকাশে ভেসে চলা সাদা মেঘ, মাঠজুড়ে দুলছে কাশফুল—প্রকৃতি নিজেই যেন ঘোষণা করছে, মা দুর্গা আসছেন। শরতের এই আবহে ঊনকোটি জেলার শ্রীরামপুর সংহতি সর্বজনীন দুর্গা পূজা কমিটি সাজাচ্ছে এক নজরকাড়া গগনচুম্বী প্যান্ডেল, যা রাজধানী আগরতলার বিগ বাজেটের দুর্গোৎসবকেও টক্কর দেবে।
অষ্টম বর্ষে পা রাখা এই পূজা কমিটির বাজেট দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। রথযাত্রার দিন খুঁটি পূজোর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। পশ্চিমবঙ্গের একঝাঁক দক্ষ শিল্পীর হাতে তৈরি হচ্ছে প্রায় ৯০ ফুট উঁচু প্যান্ডেল ও প্রতিমা। এবারের পূজোর মূল থিম—‘বৃন্দাবনের প্রেমমন্দির’। প্রতিমার নকশা, ঐতিহ্যের ছোঁয়া আর চমকপ্রদ আলোকসজ্জা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে বলেই আশা কমিটির।
কমিটির সদস্য সন্দীপ দেবরায় জানিয়েছেন, ঊনকোটি ও উত্তর জেলার মধ্যে তাঁদের পূজাই সর্বোচ্চ বাজেটের। পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে বিশেষ স্থান করে নেবে এই পূজা বলেও তিনি আশাবাদী। পঞ্চমী থেকে উন্মুক্ত হবে প্যান্ডেল। উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা, যিনি ২০২২ ও ২০২৩ সালেও এই পূজার উদ্বোধক ছিলেন।
তবে শুধু জাঁকজমক নয়, সমাজসেবাতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে সংহতি পূজা কমিটি। গত বছর প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বস্ত্র দান করা হয়েছিল, এ বছর সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে। পূজার তিনদিন বহিঃরাজ্যের খ্যাতনামা শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও থাকছে।
প্রতি বছর প্রায় ৭-৮ লক্ষ ভক্ত-দর্শনার্থীর সমাবেশ ঘটে এই প্যান্ডেলে। শুধু ঊনকোটি বা উত্তর জেলা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুরু করে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ আসেন শ্রীরামপুরে পূজার আনন্দ ভাগ করে নিতে। ফলে এলাকা এখন থেকেই উৎসবের আবহে ভরে উঠেছে।
কাশফুলে ভরা মাঠ, শরতের নীল আকাশ আর মণ্ডপের গগনচুম্বী শোভা—সব মিলিয়ে শ্রীরামপুর সংহতি সর্বজনীন দুর্গা পূজা এবছরও রাজধানীর নামকরা পূজাগুলির সাথে সমানতালে পাল্লা দেবে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
মা দুর্গার আগমনবার্তা যেমন কাশফুলে মাখা গ্রামবাংলার মাঠে প্রতিধ্বনিত হয়, তেমনি শ্রীরামপুরের এই মহোৎসবও মানুষের হৃদয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে আনন্দ, ভক্তি আর উৎসবের উচ্ছ্বাস।