
Oplus_131072
নিজস্ব প্রতিনিধি আগরতলা, ত্রিপুরার রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম, শাসক-বিরোধী দলের সাংগঠনিক প্রস্তুতি তুঙ্গে। বিজেপি যেখানে বুথ থেকে জেলা সভাপতি নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন করে প্রদেশ সভাপতি চয়নের প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে, সেখানে প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম ২৪তম রাজ্য সম্মেলনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তবে বিজেপির সাংগঠনিক কার্যক্রম বাধাহীনভাবে এগোলেও, সিপিআইএমের পথ রুদ্ধ করতে শাসক পক্ষ নানা প্রশাসনিক কৌশল প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ।
ধর্মনগর জেলা সম্মেলনে বাধার সম্মুখীন হওয়ার পর এবার সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলন আয়োজনেও মাঠ সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে। আস্তাবল, উমাকান্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় অনুমতি চাইলেও প্রশাসন একাধিক কারণ দেখিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু এসব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে সিপিআইএম তাদের রাজ্য সম্মেলন আয়োজন করবেই বলে দৃঢ় ঘোষণা করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার।
গোলাঘাটি বিধানসভার কাঞ্চনমালায় প্রবীণ বাম নেতা সুনীল দেবনাথের অসুস্থতার খোঁজ নিতে গিয়ে মানিক সরকার সাংবাদিকদের বলেন, “মাঠ না দিলেও মানুষের আবেগকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। সিপিআইএমের ২৪তম রাজ্য সম্মেলন হবেই।” তিনি আরও বলেন, “বিজেপি সরকার জনগণের আস্থা হারিয়েছে। জনজাতিদের ভাবাবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করা শাসকদের যোগ্য জবাব দেবে মানুষ।”
মানিক সরকারের মতে, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জনগণকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়েছিল। শাসক দল তিপরা মথার সহযোগিতায় ক্ষমতায় টিকে থাকলেও তাদের প্রতি জনগণের আস্থা নেই। তিনি জনগণকে ভবিষ্যতে শাসক দলের প্রলোভনের ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান।
২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন ত্রিপুরার বাম রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনে আগামী তিন বছরের জন্য রাজ্য সম্পাদকসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের নির্বাচন হবে। একইসঙ্গে দলের পরবর্তী তিন বছরের রাজনৈতিক কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
মানিক সরকারের মন্তব্য স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়, সিপিআইএম তাদের রাজ্য সম্মেলন আয়োজন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। জনগণের সমর্থনই তাদের প্রধান শক্তি। শাসক পক্ষের বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও বাম নেতৃত্ব এই সম্মেলনকে সফল করে তোলার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে।
ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ২৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া সিপিআইএমের এই রাজ্য সম্মেলন কেবল দলের অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই নয়, শাসক দলের বিরুদ্ধে বামপন্থী শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবেও গণ্য হবে।