
Oplus_131074
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
মনু নদীর দুর্বল বাঁধের মেরামত ও নির্মাণের দাবিতে কংগ্রেস দল কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বুধবার কৈলাসহর জেলা কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ইস্যুতে কংগ্রেস নেতারা সরব হন। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা, জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জামান, কংগ্রেস নেতা রুদ্রেন্দু ভট্টাচার্য, শ্যামল ভট্টাচার্য, এবং আশীষ সেনগুপ্ত প্রমুখ।
বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা জানান, কৈলাসহর মহকুমা বরাবরই বন্যা প্রবণ এলাকা। কুমারঘাট থেকে কৈলাসহর পর্যন্ত মনু নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ রয়েছে। কিন্তু এসব বাঁধের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় বর্ষায় বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। বর্ষা এলেই অল্পস্বল্প কাজ হলেও তেমন কোনো সরকারী উদ্যোগ না নেওয়ায় বর্ষা এলেই ভয়ে দিন গুনতে হয় কৈলাসহরবাসীর।
বীরজিৎ সিনহা অভিযোগ করেন,রাঙ্গাউটি সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশের দেবীপুর এলাকায় একটি বড় ও উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, যা ভারতীয় অংশে জল প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর বাংলাদেশের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কৈলাসহর সেবার বন্যার হাত থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিধায়ক জানান,উনি বিধানসভায় বাংলাদেশের অবৈধ বাঁধ তৈরীর বিষয়ে সরব হলে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত নেতারা বাঁধ পরিদর্শন করলেও এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করলেও বাস্তব প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, স্লুইচ গেট গুলি দীর্ঘদিন ধরে সরকারী উদাসীনতায় নষ্ট হচ্ছে,যা মেরামত করা জরুরি।
কংগ্রেস দল ঘোষণা করেছে, যদি ১৫ দিনের মধ্যে মনু নদীর বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু না হয়, তবে ২৫ জানুয়ারি কৈলাসহর এয়ারপোর্ট সংলগ্ন ত্রিমুখী এলাকায় পথ অবরোধ করা হবে। পাশাপাশি টিলাবাজার থেকে রাঙ্গাউটি সীমান্তের দেবীপুর এলাকায় লংমার্চ করা হবে।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের বন্যার ভয়াবহতা মানুষ এখনো ভুলতে পারেনি। বর্তমানে দুর্গাপুর এবং গোবিন্দপুর এলাকায় বাঁধের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সরকারের নির্মিত উঁচু বাঁধের কারণে কৈলাসহর এবং আশপাশের এলাকাগুলো আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
বদরুজ্জামান বলেন, “মানুষের স্বার্থে আমাদের আন্দোলন চলবে। ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শুরু না হলে কংগ্রেস ৪৮ ঘণ্টার বন্ধ ডাকার সিদ্ধান্ত নেবে। এর পরেও যদি প্রশাসন তৎপর না হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হব আমরা।”
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের দায়িত্ব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত মনু নদীর বাঁধ মেরামতের কাজ যদি সময়মতো শুরু না হয়, তবে বর্ষার সময় সাধারণ মানুষকে চরম বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। তবে মহকুমাবাসীর দাবি, এবার যেন প্রকৃত সমস্যার সমাধান হয়।