
প্রতিনিধি অনুপম পাল। কৈলাসহর
পূর্ত দপ্তরের অবহেলা যেন মাথা গোঁজার ঠাঁইকেই পরিণত করেছে ভুতুড়ে বাংলোয়! অভিযোগ, দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে সংস্কারের মুখ দেখেনি ঊনকোটি জেলার পূর্ব গোবিন্দপুর এলাকার পূর্ত দপ্তরের সরকারি কোয়ার্টারগুলি। অথচ প্রতি বছর পূর্ত দপ্তরের মূল কার্যালয় সংলগ্ন কোয়ার্টারগুলিকে রং করা থেকে শুরু করে সংস্কারের কাজ সঠিকভাবে হয়।
কর্মী সুভাষ রঞ্জন বণিক ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান, বসবাসের অযোগ্য জরাজীর্ণ কোয়ার্টারে থাকতে বাধ্য করা হলেও নিয়মিত কেটে নেওয়া হচ্ছে ভাড়ার টাকা। বহুবার লিখিত অভিযোগ জানানোর পরও কর্তৃপক্ষের কর্ণপাত নেই। বারো বছর আগে এখানে ওঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত একটিবারও সংস্কার হয়নি।অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে সামান্য বৃষ্টিতেই কোয়ার্টারের সামনে জল জমে থাকে। ঘরের ভেতর আর্দ্রতার কারণে উলুপোকায় নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র, গাছপালা ডুবে মরছে, প্রতিদিন সাপ ঢুকে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি ঘুমন্ত অবস্থায় সাপ তার শরীরে উঠে যাওয়ার ঘটনায় গোটা পরিবার ভয়াবহ মানসিক চাপে দিন কাটাচ্ছে। কোয়ার্টারের মেইন গেট ভাঙা থাকায় ইতিমধ্যেই তিনটি সাইকেল চুরি হয়েছে।
শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন সুভাষবাবু। তিনি দুইবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন, তবুও দপ্তরের উদাসীনতা একটুও কমেনি। তার আক্ষেপ— “যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায় নেবে কে?”
স্থানীয়দের প্রশ্ন, পূর্ত দপ্তরের এত নজরদারি, এত নিয়মকানুন থাকলেও কীভাবে বছরের পর বছর এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকে সরকারি আবাসন? কেন দপ্তরের মূল কার্যালয় সংলগ্ন কোয়ার্টারগুলিতে নিয়মিত সংস্কার হয়, অথচ অন্যত্র এমন বেহাল দশা?
সরকারি কোয়ার্টার আজ পরিণত হয়েছে ভুতুড়ে বাংলোয়, অথচ দপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা নির্বিকার। ক্ষোভের সুরে কর্মী সুভাষ বণিক আবেদন করেছেন, অবিলম্বে যেন তার পরিবারকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয় অথবা কোয়ার্টার সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।