
দ্যা ইউনাইটেড প্রতিনিধি অনুপম পাল,ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের গরীব ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য একটি বড় ভরসা। উন্নত মানের চিকিৎসা, দক্ষ চিকিৎসক, আধুনিক হাসপাতাল এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচে চিকিৎসার সুযোগ বাংলাদেশি রোগীদের ভারতের প্রতি নির্ভরশীল করে তুলেছে। প্রতিবছর হাজারো মানুষ বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমায় উন্নত চিকিৎসার আশায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার কিছু অস্থিরতার কারণে এই চিকিৎসাসেবা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে।
ভিসা প্রাপ্তিতে জটিলতা ও এর প্রভাব
বর্তমানে ভারতে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশিদের ভিসা পেতে অনেক বেশি সময় এবং খরচ লাগছে। আগে যেখানে ১২০০-১৩০০ টাকার বিনিময়ে ভিসা পাওয়া যেত, সেখানে এখন এই প্রক্রিয়া আরও কঠিন এবং ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে এই খরচ এবং সময় ব্যয় করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই দেশের চিকিৎসা পরিষেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন, যা অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নিরাময়ের জন্য যথেষ্ট নয়।
আজ কৈলাসহর মনু ল্যান্ড কাস্টমস দিয়ে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি দম্পতি রাধেশ্যাম পাল এবং তার স্ত্রীর অভিজ্ঞতা এই সংকটের একটি জীবন্ত উদাহরণ।আমাদের প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, তাদের মা কিডনি রোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে, কিন্তু ভিসা সমস্যার কারণে তাকে ভারতে আনা সম্ভব হয়নি। রাধেশ্যাম পাল কোনোভাবে নিজের ও স্ত্রীর জন্য ভিসা সংগ্রহ করে শিলংয়ের নিগ্রিমস হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর উদ্দেশ্যে আজ ভারতে প্রবেশ করেছেন। তবে তার মায়ের চিকিৎসা করাতে না পারার হতাশাও প্রকাশ করেছেন। তিনি ভারতের সরকারের ও বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন, বাংলাদেশি গরীব-মধ্যবিত্ত রোগীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজতর করা হোক।
এই সমস্যা সমাধানে দুই দেশের সরকারের উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসা একটি মৌলিক অধিকার। দুই দেশের সহযোগিতার মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা গেলে অসংখ্য জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। চিকিৎসা সেবায় ভারত যেমন এগিয়ে, তেমনই এই সেবা পেতে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা দূর করা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
রাধেশ্যাম পালের মতো আরও অনেক বাংলাদেশি পরিবার প্রতিনিয়ত একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। ভারত-বাংলাদেশের উষ্ণ সম্পর্ক ও সৌহার্দ্যের কথা বিবেচনা করে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। উন্নত চিকিৎসা পেতে সাধারণ মানুষের জীবন যেন ভিসা জটিলতার কারণে ঝড়ে না পড়ে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা।