
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
কৈলাসহরের ব্যস্ততম এলাকায় ট্রাফিক আইন অমান্য করে পণ্য খালাসের জেরে এক গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের উদাসীনতা এবং ট্রাফিক দপ্তরের ব্যর্থতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আহত হয়েছেন পুর পরিষদের অস্থায়ী কর্মী ভজন দেবত্রাতা, যিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর চোট পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুর এলাকার নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টার মধ্যেই পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে মাল খালাস করে নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়তে হবে। দুপুর ১২টার পর আবার পণ্য খালাসের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে এই নিয়ম মানা তো দূরের কথা, প্রশাসনের তেমন নজরদারি পর্যন্ত নেই। যার ফলে আজ সকাল ১১টা নাগাদ ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে একটি পণ্যবাহী গাড়ি (নম্বর: টিআর-০১-এসি-১৭১১) রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মাল খালাস করছিলো। সরু রাস্তার কারণে পিছন থেকে আসা আরেকটি পণ্যবাহী গাড়ি (নম্বর: টিআর-০২-এল-১৬৯৯) রাস্তার ডানদিকে যেতে বাধ্য হয়। ফলে গাড়িটি প্রথমে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা মারে এবং পরবর্তীতে আরেকটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা লেগে সেটি ভেঙে পড়ে যায় ভজন দেবত্রাতার ওপর। এতে তার কোমরে মারাত্মক আঘাত লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এসে ভজন দেবত্রাতাকে উদ্ধার করেন এবং অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের সহায়তায় ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানা গেছে, তার অবস্থা গুরুতর এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আগরতলার জিবি হাসপাতালে রেফার করা হতে পারে।
ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা গাড়িচালককে আটক করে এবং কিছু উত্তম-মধ্যমও দেয়। পরে কৈলাসহর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে টিআর-০২-এল-১৬৯৯ ও টিআর-০১-এসি-১৭১১ নম্বরের দুটি গাড়ি সহ চালকদের আটক করে।
এই ঘটনায় সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে ট্রাফিক বিভাগের ভূমিকা নিয়ে। যেখানে আইন অনুযায়ী সকাল ৮টার মধ্যে পণ্যবাহী গাড়ির খালাস শেষ হওয়ার কথা, সেখানে কীভাবে সকাল ১১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত গাড়ি অবৈধভাবে মাল খালাস করছিল? সেই সময় ট্রাফিক পুলিশ কোথায় ছিল? কেন তারা সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি?
এক স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ট্রাফিক দপ্তরের ব্যর্থতা। যদি তারা দায়িত্ব পালন করতো, তাহলে এমন ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটতো না। একটা মানুষের প্রাণও যেতে পারতো!”
শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় এভাবে আইন ভেঙে পণ্য খালাস চলতে থাকলে যে কোনো সময় আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসন এবং ট্রাফিক দপ্তরের গাফিলতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। এখন প্রশ্ন হলো, এই ঘটনার পর প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে? ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, নাকি এই অব্যবস্থাপনার শিকার হতে থাকবে সাধারণ মানুষ?
শহরবাসী এখন নজর রাখছে প্রশাসনের দিকে—দেখার বিষয়, তারা কি শুধুমাত্র গাড়িচালকদের শাস্তি দিয়ে দায় সেরে ফেলবে, নাকি ট্রাফিক দপ্তরের দায়িত্বহীনতারও জবাবদিহি করবে?