
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
পাহাড়, উপত্যকা আর সবুজ প্রকৃতির মাঝে লুকিয়ে থাকা ত্রিপুরার ছোট্ট রাজ্য যেন তার মেধা আর প্রতিভার প্রদীপ জ্বেলে দেশব্যাপী নিজেকে উজ্জ্বল করে তুলল। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রজেক্ট বীরগাঁথা কর্মসূচি ত্রিপুরাকে গর্বিত করল। সারা দেশের ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১ কোটি ৭৬ লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে জায়গা করে নিল রাজ্যের চার তরুণ মেধাবী।
এই চারজন ত্রিপুরার আলোকবর্তিকা— হৃদম রায় (রচনা, শ্রীকৃষ্ণ মিশন স্কুল), সাগর দেব্বর্মা (রচনা, একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল), মেঘরাজ দেবরায় (অঙ্কন, আর কে এম বিদ্যালয়), এবং ঈশিকা শীল (কবিতা, তেলিয়ামুড়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়)। তাদের অসাধারণ সৃজনশীলতা ও প্রতিভা প্রমাণ করেছে যে ত্রিপুরার মাটি শুধুমাত্র সবুজে ঘেরা নয়, এটি অসীম সম্ভাবনারও আধার।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগের গাথা তুলে ধরতে ২০২১ সালে প্রজেক্ট বীরগাঁথা কর্মসূচির সূচনা হয়। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল দেশের যুব প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম এবং সেনাবাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগিয়ে তোলা। হৃদম, সাগর, মেঘরাজ ও ঈশিকা তাদের কবিতা, রচনা ও অঙ্কনের মাধ্যমে বীর সেনানীদের ত্যাগ ও সাহসিকতাকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছে, যা কেবল মুগ্ধতাই আনেনি, বরং ত্রিপুরাকে গর্বের আসনে বসিয়েছে।
এই চার শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পুরস্কারে সম্মানিত হননি, তারা প্রমাণ করেছে যে ছোট্ট রাজ্যের ছোট্ট স্বপ্নগুলোও দেশজুড়ে আলো ছড়াতে পারে। এই সাফল্য শুধু তাদের ব্যক্তিগত নয়, এটি ত্রিপুরার মানুষেরও। তাদের সৃজনশীলতা যেন রাজ্যের সবার মনে আশা ও অনুপ্রেরণার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে।
ত্রিপুরার এমন সাফল্যে গর্বিত রাজ্যের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। এ যেন একটি নতুন দিনের সূচনা, যেখানে ত্রিপুরার তরুণ প্রজন্ম শুধু রাজ্যের নয়, গোটা দেশের গর্ব হয়ে উঠছে।
বীরগাঁথা কর্মসূচিতে ত্রিপুরার চার শিক্ষার্থীর এই সাফল্য একটি মাইলফলক, যা রাজ্যের সৃজনশীলতা এবং প্রতিভার পরিচায়ক। তাদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ভবিষ্যত প্রজন্ম দেশ ও রাজ্যের গর্বিত অধ্যায়কে এগিয়ে নিয়ে যাবে— এই প্রত্যাশায় রাজ্যের মানুষ উদগ্রীব। এই সাফল্যের জন্য হৃদম, সাগর, মেঘরাজ, ও ঈশিকা হয়ে থাকবেন ত্রিপুরার গর্বের প্রতীক।