
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
কৈলাসহর চন্ডিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হালাইরপার সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির আয়োজনে চলতি বছরও কিনাইচর স্কুল মাঠে জমকালোভাবে অনুষ্ঠিত হলো দুর্গোৎসব। চার দিনের এই উৎসব শুধু পুজো-পার্বণেই সীমাবদ্ধ ছিল না, সঙ্গে চলেছিল নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলো-ঝলমলে মণ্ডপসজ্জা আর অগণিত মানুষের ঢল। গ্রামের মানুষ যেমন ভক্তির সুরে দেবী আরাধনায় মেতেছিলেন, তেমনই সান্ধ্যকালীন আসরে নৃত্য, সঙ্গীত ও নাট্যমঞ্চায়নে ভরে উঠেছিল পূজা প্রাঙ্গণ।তবুও সব আনন্দের মাঝেই এসে পড়ল বিদায়ের সেই অশ্রুমাখা মুহূর্ত।শুক্রবার দুপুরে মনু নদীর তীরে ভক্তরা জমায়েত হন দেবীকে বিদায় জানাতে। নদীর বুকে ঢেউ খেলানো জলে ধীরে ধীরে প্রতিমা ভাসিয়ে দেওয়া হলো— সেই দৃশ্যকে কেন্দ্র করে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ল অদ্ভুত এক বিষণ্ণতা।গ্রামের মহিলারা দুপুরে সিঁদুর খেলায় মাতোয়ারা হলেও নিরঞ্জনের সময় তাঁদের চোখের কোণে চিকচিক করছিল জল। “আবার এসো মা, আবার ভরে দাও আমাদের ঘর”— এ যেন প্রত্যেকের কণ্ঠে উচ্চারিত এক অদৃশ্য মন্ত্র। ঢাকের আওয়াজ আর শঙ্খধ্বনির মাঝে মা-দুর্গাকে বিদায় জানানোর সেই দৃশ্য প্রত্যেক ভক্তের মনে অমোঘ ছাপ রেখে গেল।
আজকের এই বিদায়-আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সভাপতি হিমাংশু দাস, সহ-সভাপতি বিভন মালাকার, সম্পাদক উত্তম ঘোষ এবং কোষাধ্যক্ষ জয় ঘোষ। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কোষাধ্যক্ষ জয় ঘোষ জানান, “প্রতিবছরই আমাদের পূজো মানুষের মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়। আনন্দের সঙ্গে আমরা যেমন মাতি, তেমনই শেষদিনে মা-বিদায়ে চোখ ভিজে আসে। এটাই বাঙালির চিরন্তন আবেগ।”
মা দুর্গার নিরঞ্জনের সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হলো হালাইরপার সার্বজনীন দুর্গোৎসব। তবে বিদায়বেলায় গ্রামের মানুষের অন্তর জুড়ে রইল একটাই আশা— “আসছে বছর আবার হবে।”