
প্রতিনিধি অনুপম পাল,আগরতলা
ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ বিশ্ববন্ধু সেন হঠাৎ করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাজ্যজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় আগরতলা থেকে ধর্মনগরগামী লোকাল ট্রেন নং-৫৫৬৭৫-এ সফরের সময় তিনি ট্রেনের শৌচাগারে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
জানা যায়, ট্রেনের বি-১ কোচে যাত্রা করছিলেন তিনি। প্রায় ৫টা ৩০ মিনিট নাগাদ ট্রেনের টয়লেটে গেলে দীর্ঘক্ষণ বের না হওয়ায় তার দেহরক্ষীরা খোঁজ নিতে গিয়ে দেখতে পান, তিনি মেঝেতে পড়ে আছেন এবং সংজ্ঞাহীন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ (টিএমসি) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
টিএমসি-তে ভর্তি হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। চিকিৎসকরা তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। খবর পেয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা ও বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী হাসপাতালে ছুটে যান এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববন্ধু সেনের শারীরিক অবস্থা আরও সংকটজনক হলে তাঁকে আইএলএস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং ব্রেন হেমরেজের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাত ৯টা নাগাদ আইএলএস হাসপাতালের তরফে জানা যায়, রক্ত জমাট সরাতে তার মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া শুরু করা হয় এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে।
এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেননি। তবে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানান, “টিএমসি-তে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বিশ্ববন্ধু বাবুর শারীরিক অবস্থা সংকটজনক হয়ে ওঠে, ফলে তাকে আইএলএস-এ স্থানান্তর করা হয়। আমরা তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”
প্রসঙ্গত, টিএমসি-তে প্রায় দুই ঘণ্টার মতো সময় অতিবাহিত হয়, এরপরই তাঁকে স্থানান্তর করা হয় আইএলএস-এ। এই বিলম্ব নিয়েও কিছু প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
বিশ্ববন্ধু সেনের আকস্মিক অসুস্থতার খবরে শুধু তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র নয়, গোটা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বহু মানুষ হাসপাতালের বাইরে ভিড় করছেন তাঁর খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। সামাজিক মাধ্যমে নেতানেত্রী সহ সাধারণ মানুষ তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
আইএলএস হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে চলেছেন এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাঁর সুস্থতার পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।