
ফটিকরায়,নিজস্ব প্রতিনিধি,ফটিকরায় যেন বিজেপির নতুন স্লোগান—”বিদ্যুৎ চুরি করে দেখাও, চর্চায় আসো!” দলের নবনির্বাচিত মণ্ডল সভাপতি তরুণ কুমার দাস হাতে-নাতে ধরা পড়লেন বিদ্যুৎ চুরির দায়ে। মঙ্গলবার বিকেলে এমড়াপাশার এলাকায় পুলিশের এবং বিদ্যুৎ নিগমের তৎপরতায় এ কাণ্ড ফাঁস হয়।
স্থানীয় মানুষ অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, বিজেপি নেতা নিজ বাড়িতে হুকলাইন টেনে বেআইনি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। কিন্তু শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকায় আঙ্গুল তুলতে ভয় পাচ্ছিলো দপ্তর। শেষমেশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিদ্যুৎ নিগম ও পুলিশ যৌথ অভিযানে গিয়ে ‘অধর্মের’ বিদ্যুৎচর্চা বন্ধ করে দিলেন।
স্থানীয়দের বক্তব্য, গোটা ফটিকরায় এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা এমনিতেই শোচনীয়। কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং, কখনও মাসের পর মাস মেরামতের কাজ। পানীয় জল থেকে শুরু করে সেচের জল—সব ক্ষেত্রেই ভুগতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। কিন্তু এদিকে বিজেপি নেতা দিব্যি হুকলাইন চালিয়ে ‘নিজের আঙিনা আলোয় ভরিয়ে তুলছিলেন’। ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ তো বটেই, তবে শুধু নিজের বাড়ির জন্য!
ধরা পড়ার পর মণ্ডল সভাপতিকে দেখা গেল ফোনে কার যেন শরণাপন্ন হচ্ছেন। এলাকাবাসী বলছে, ক্ষমতার ‘সার্কিট ব্রেকার’ খুঁজছিলেন তিনি। তবে এ যাত্রায় তার ফোনের শক্তি ব্যর্থ হয়েছে। জরিমানা হিসেবে মাত্র ১,০০০ টাকা দিয়ে শেষমেশ পরিস্থিতি সামাল দিতে হল।
নগণ্য জরিমানা আর পুলিশের সংক্ষিপ্ত তৎপরতায় ঘটনার ইতি হলেও প্রশ্ন উঠছে বড়ো পরিসরে। বিদ্যুৎ বেসরকারিকরণের জাঁতাকলে সাধারণ মানুষ যেখানে বিদ্যুৎ বিল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে শাসক দলের নেতা বেআইনি পথে বিদ্যুৎ চুরি করছেন। বিজেপির ‘আচ্ছে দিন’-এর বার্তা যদি এই হয়, তবে গরিবদের জন্য দিন যে আরও অন্ধকার, তা বলাই বাহুল্য।
এই ঘটনা প্রমাণ করে বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার কেবল নিজেদের ইঞ্জিন চালাতেই ব্যস্ত। সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ সমস্যা দূরীকরণে সরকার উদাসীন। তবে বিজেপির এই ‘বিদ্যুৎ চুরি মডেল’ দেখে মানুষ এখন বলছে, “আসুন, আমরা সবাই তরুণবাবুর কাছ থেকে বিদ্যুৎ চুরি করার বিদ্যা শিখি!”