
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর যখন উন্নয়নের ঢাক বাজাচ্ছে, তখন ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের রোগীরা ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে দিশাহারা। সাত দিন ধরে হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগ চিকিৎসকহীন। দুর্ঘটনায় আহত রোগীরা অসহায়ভাবে হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরছেন, কিন্তু কোনো বিকল্প চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়নি।
সরকারি ভাষণে স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নের বড় বড় প্রতিশ্রুতি শোনা গেলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কেবল “বিজ্ঞাপনের উন্নয়ন” চলছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নয়। স্বাস্থ্য দপ্তরের উদাসীনতার কারণে একমাত্র অস্থি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাজ্যের বাইরে চলে যাওয়ার পর হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। অথচ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডা. রোহন পাল গত কয়েকদিন ধরে স্বাস্থ্য দপ্তরে বারবার চিকিৎসক পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। ফলাফল? নীরবতা!
প্রশ্ন হলো, রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যখাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, কিন্তু সেই টাকাগুলো কি শুধুই চটকদার বিজ্ঞাপনের জন্য? সরকার যদি স্বাস্থ্যখাতে এতই আন্তরিক হয়, তবে কেন জরুরি বিভাগে চিকিৎসক নেই? কেন রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা রাজ্যের বাইরে চিকিৎসা নিতে যেতে হচ্ছে?
বাস্তবতা হচ্ছে, সরকারি হাসপাতাল এখন শুধুই এক মরিচিকা। বাজেট আসে, বিজ্ঞাপন ছাপা হয়, নেতাদের ভাষণ হয়— কিন্তু হাসপাতালের বেহাল দশা বদলায় না। রোগীরা সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেলে, সেটাই এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো, রাজ্য সরকার কি বিজ্ঞাপন দিয়েই মানুষের হাড় জোড়া লাগাবে? যদি স্বাস্থ্যব্যবস্থার এই করুণ দশা চলতেই থাকে, তাহলে হয়তো খুব শিগগিরই সরকার ঘোষণা করবে— “সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বদলে শুধু উন্নয়নের বিজ্ঞাপন পাওয়া যাবে!”
সরকারের শীর্ষ মহল যদি সত্যিই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আন্তরিক হয়, তাহলে এখনই জরুরি ভিত্তিতে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা উচিত। অন্যথায়, স্বাস্থ্যখাতের এই দুর্দশা শুধুই রাজ্য সরকারের অব্যবস্থাপনার নগ্ন উদাহরণ হয়ে থেকে যাবে।