
oplus_2
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
সিপিআই(এম) এর ২৪তম রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ ঘিরে ত্রিপুরার রাজনীতিতে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এই সমাবেশ বানচাল করতে বিজেপি সরকার শুরু থেকেই স্বৈরাচারী মনোভাব গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সিপিআই(এম) কৈলাসহর মহকুমা সম্পাদক অঞ্জন রায়। সোমবার সন্ধ্যায় কৈলাসহর দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
অঞ্জন রায় জানান, আগরতলায় সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য কৈলাসহর থেকে ৯টি বাস ভাড়া করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে রবিবার সন্ধ্যায় বিএমএস (ভারতীয় মজদুর সংঘ) নেতৃত্ব আচমকা বাস ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলে পার্টি কর্মীদের মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। অঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, এটি সরাসরি বিজেপি সরকারের প্রভাবের ফল।
এ বিষয়ে পার্টির আরেক নেতা কান্তিলাল দেব বলেন, “কৈলাসহর মোটরস্ট্যান্ডকে রাজনীতির কারখানায় পরিণত করেছে বিএমএস নেতৃত্ব। এটি একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা এভাবে রাজনৈতিক দলের স্বার্থে ব্যবহার করা ঠিক নয়। দলীয়করণের এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।”
তবে সিপিআই(এম) কর্মীরা এই বাধার মুখে থেমে থাকার পাত্র নয়। সিপিআই(এম)পার্টির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রাইভেট মালিকদের গাড়ি ভাড়া করে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে কর্মীরা আগরতলার সমাবেশে যোগ দেবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সিপিআই(এম)-এর অন্যান্য নেতারা, যেমন অরুণাভ সরকার, নিরঞ্জন রায় ও স্বপন আচার্য, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তারা জানান, ফ্যাসিবাদী বিজেপি সরকার গণতান্ত্রিক পরিবেশকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু সিপিআই(এম) কর্মীদের মনোবল এত সহজে দমিয়ে রাখা যাবে না।
রাজনীতির ময়দানে উত্তেজনা ও সংঘাত
রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সিপিআই(এম) নেতারা বলেন, এই ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ রাজ্যের গণতন্ত্রকে কলুষিত করছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা থাকলেও গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়ার কোনো জায়গা নেই।
তারা আরও বলেন, এই ঘটনায় বিএমএস-এর ভূমিকা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্যের সাধারণ মানুষের স্বার্থে মোটরস্ট্যান্ড এবং গণপরিবহন পরিষেবাগুলোকে দলীয়করণের বাইরে রাখার দাবি তোলেন নেতারা।
সিপিআই(এম)-এর নেতাদের মতে, বিজেপি সরকারের এই স্বৈরাচারী আচরণে সাধারণ মানুষও ক্ষুব্ধ। অনেকেই মনে করেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের কর্মকাণ্ড চালানোর অধিকার রাখে। তাই এই ধরনের দলীয় প্রভাব এবং স্বৈরাচার বন্ধ হওয়া উচিত।
সিপিআই(এম) এর ২৪তম রাজ্য সম্মেলন নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এই অভিযোগ গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইকে আরও তীব্র করে তুলেছে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। রাজ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও একবার সামনে এসেছে। এখন দেখার বিষয়, সিপিআই(এম) কর্মীরা কতটা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হন। তবে একথা স্পষ্ট যে, তাদের এই লড়াই শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।