
Oplus_131072
ত্রিপুরার রাজনীতিতে পরিবর্তনের ছোঁয়া স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। বাবা সাহেব আম্বেদকরকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে ত্রিপুরা তপঃ জাতি সমন্বয় সমিতির ডাকে আয়োজিত এক কনভেনশনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বিজেপি সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। আগরতলা টাউন হলে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক সুধন দাস, প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী এবং দলিত শোষণ মুক্তি মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক রামচন্দ্র ডোমসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
মানিক সরকার বলেন, “বিজেপি সরকারের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে ত্রিপুরার মানুষ চরম সর্বনাশের শিকার হয়েছেন। এখন মানুষ তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।” তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির একটিও পালন করতে পারেনি। সপ্তম পে কমিশন কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি বা ৩০০ টাকা রেগার মজুরি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি এখনো অধরাই রয়ে গেছে। ত্রিপুরায় বর্তমানে রেগার মজুরি ২৪০ টাকার বেশি নয় এবং গত সাত বছরে শুন্য পদের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজারের উপরে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ত্রিপুরায় গণতন্ত্র এখন বিপন্ন। প্রতিবাদ করলেই আক্রান্ত হতে হচ্ছে, এমনকি বাড়ি ছাড়া হতে হচ্ছে।” তাঁর মতে, বিজেপি সরকারের আমলে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক হিংসার শিকার হয়েছেন বহু বাম কর্মী। ২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৮ জন বাম কর্মীকে খুন করা হয়েছে এবং অনেককে শারীরিকভাবে পঙ্গু করে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
মানিক সরকার বিজেপি ও আরএসএসের বিরুদ্ধে সংবিধান পরিবর্তনের চক্রান্তের অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, “বিজেপি সরকার পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। তারা সংবিধান, জাতীয় পতাকা এবং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে উপেক্ষা করে চলেছে। এই অবস্থায়, শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, শিক্ষক, এবং সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে শ্রেণীগত সংগ্রাম জোরদার করতে হবে।”
ত্রিপুরার বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজ্যের মানুষ এখন বুঝতে পারছেন বিজেপি সরকারের বিভ্রান্তি ও প্রতারণা। সিপিআইএমের গণসংগঠনগুলোর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ত্রিপুরার রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতাও। তিনি বলেন, “বিজেপি সরকার বিভিন্ন রাজ্যের সমস্যা সমাধানে অক্ষম। তাঁদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি এখন কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ।”
কনভেনশনের মাধ্যমে মানিক সরকার ও অন্যান্য নেতারা জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার জন্য।