
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
ত্রিপুরার কুমারঘাটে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা শুরু হয়েছে। ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পশ্চিম ত্রিপুরার লোকসভা আসনের সাংসদ ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা, মহকুমা শাসক এন এস চাকমা এবং সমাজকর্মী পবিত্র দেবনাথ।
পি ডব্লিউ ডি ময়দানে আয়োজিত মেলায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাস স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং পিঠে পুলির উৎসবের এই প্রাচীন সংস্কৃতিকে পুনর্জীবিত করতে এই মেলার আয়োজন। মেলার মাধ্যমে মানুষ তাদের ব্যস্ত জীবনে আনন্দের সুর খুঁজে পাবেন।”
মেলায় প্রায় ৪৫টি স্টল রয়েছে, যেখানে স্থানীয় সহায়ক দলগুলোর দিদিদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী, পিঠে পুলি এবং অন্যান্য সুস্বাদু খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলছে।
অনুষ্ঠানে রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, “কৃষকরা আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড। তাদের সোনালী ফসলের সুরে মকর সংক্রান্তি উদযাপিত হয়। এই মেলা কৃষি, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সমন্বয়কে নতুন মাত্রা দেয়। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করছে।”
উদ্বোধনী বক্তব্যে সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব বলেন, “ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এই মেলাগুলোই আমাদের দেশকে বিশ্বের দরবারে অনন্য করে তুলেছে। ২০১৮ সালের পর থেকে ত্রিপুরার প্রকৃত উন্নয়ন শুরু হয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অগ্রগতিতে এই অঞ্চল এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর অতিথিরা মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। মেলায় উপস্থিত হাজারো মানুষের মুখে ছিল উৎসবের আনন্দ। স্থানীয় শিল্পীরা তাদের দক্ষতা এবং পণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে মেলাকে আরও রঙিন করে তুলেছেন।
ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক এই পৌষ মেলা শুধু উৎসব নয়, বরং মানুষের জীবনের ঐতিহ্য ও আনন্দকে পুনর্জীবিত করার এক অনন্য প্রয়াস। এই মেলার মাধ্যমে ত্রিপুরার ঐতিহ্য আরও গভীর শিকড় স্থাপন করবে।