কৈলাসহর,প্রতিনিধি অনুপম পাল,ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মনুল্যান্ড কাস্টমসকে ঘিরে মহকুমাবাসীর স্বপ্ন আজ হতাশার মুখে। ১৯৯৪ সালে চালু হওয়া এই কাস্টমস স্টেশন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে উঠে এলেও, ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্স প্রকল্পের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে।
২০১৭ সালে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী তপন চক্রবর্তীর হাত ধরে আরকেআই স্কুলের দীঘির উত্তরপাড়ে এই প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার ১২ কোটি টাকার প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন করিয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করে। তবে ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে নির্মাণ কাজ থমকে যায়। এলাকাবাসী অনেকেই জানান বর্তমান বিজেপি জোট সরকার চেষ্টা করছে প্রকল্পটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার।এলাকাবাসীরা জানান,কখনো উনারা শোনেছেন আরকেআই স্কুলের বর্তমান ছাত্রাবাস ভেঙে সেই জমিতে গড়া হবে ইন্টিগ্রেটেড সেন্টার। কখনো বলা হলো কৈলাসহর প্রেস ক্লাবের ঘর ঘেঁষে গড়ে তোলা হবে প্রকল্পটি।কিছু দিন আগে চন্ডীপুর বিধানসভার অন্তর্গত মূর্তিছড়া চা-বাগান এলাকার আয়রন ব্রিজ এলাকায় প্রকল্পটির জন্য জমি পরিদর্শনেও এসেছিলেন বেশ কিছু আধিকারিক। বর্তমানে এ নিয়ে আর কোনো আলোচনা শোনা যায়না বললেই চলে। যার ফলে বর্তমানে ২০১৭ সালের শিলান্যাস করা জায়গায় খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে, আর প্রকল্পস্থল ঝোপঝাড়ে ঢাকা পড়েছে।
আজ সকালে প্রকল্পের জন্য ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রী, বিশেষত পাথরের টুকরো, একটি ড্রজার ও ট্রিপার গাড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় কৈলাসহর থানার পুলিশ তা আটক করে। গাড়ি চালকদের কাছ থেকে যথাযথ উত্তর না পাওয়ায় গাড়ি দুটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
শহরের কিছু যুবক এই চুরির ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে কৈলাসহর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তাদের অভিযোগ, চুরির পেছনে হয়তো কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যুক্ত। কৈলাসহর থানার ওসি সুকান্ত সেন চৌধুরী জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এলাকাবাসীর মতে, এর আগেও একাধিকবার নির্মাণ সামগ্রী চুরির ঘটনা ঘটেছে। এবং নির্মাণকারী সংস্থার পক্ষ থেকে কৈলাসহর থানায় একটি অভিযোগও করা হয়েছিলো। তবে সেই অভিযোগের কোনো সুরাহা এখনো করতে পারেনি পুলিশ।
আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে যুক্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্স চালু হলে তা দুই দেশের ব্যবসা ও স্থানীয় মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী হবে। দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু করতে দুই দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা।
তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করা এবং প্রকল্পের স্থবিরতা কাটিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করাই এখন সময়ের দাবি। সরকারি সম্পদ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে গোটা মহকুমায়। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ এবং নির্মাণ সামগ্রী গুলো সরকারী হেফাজতে নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন মহকুমার শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।