
নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা, বিদ্যুৎ বিল হাতে পেয়েই হতবাক হয়ে পড়লেন মোহনপুর মহকুমার তুলাবাগান এলাকার বাসিন্দা দিলীপ সাহা। দুই বছর ধরে বন্ধ থাকা মিটারে হঠাৎ করে প্রায় তিন লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের এই বিশাল অঙ্কের বিল নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ এবং আলোচনার ঝড় উঠেছে।
তুলাবাগান অফিসটিলা পাড়ার দিলীপ সাহা ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বশেষ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। এরপর থেকে দুই বছর ধরে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ বিল মাপতে আসেনি কোনো কর্মী। অথচ চলতি মাসে বিদ্যুৎ দপ্তরের এক কর্মী এসে তার হাতে দুই লক্ষ তিরানব্বই হাজার আটশো নব্বই টাকার একটি বিল ধরিয়ে দেন।
দিলীপ সাহার বাড়িতে বিদ্যুতের খরচ খুবই সীমিত। ঘরে রয়েছে মাত্র একটি ফ্যান এবং দুটি এলইডি বাল্ব। এছাড়া বাড়ির মিটার দীর্ঘদিন ধরেই বিকল অবস্থায় রয়েছে। প্রতিবেশীরা বিলের অস্বাভাবিক অঙ্ক দেখে বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দিলীপ সাহার মতো সীমিত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর কাছে এত বড় অঙ্কের বিল আসা নিঃসন্দেহে বিদ্যুৎ দপ্তরের চরম গাফিলতির উদাহরণ। স্থানীয়দের অভিযোগ, দপ্তরের অব্যবস্থাপনা এবং অদক্ষতার কারণেই এমন অযৌক্তিক বিল তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের সিনিয়র ম্যানেজারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান, যা ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।
এই ঘটনা বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ঘটায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, “সরকার কি সাধারণ মানুষের ঘাড়ে এমন অযৌক্তিক বিল চাপিয়ে রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা করছে?” বিল সংশোধনের দাবিতে স্থানীয়রা বিদ্যুৎ দপ্তরের উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন।
দিলীপ সাহার পরিবারের মতো অল্প শিক্ষিত গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধে সঠিক বিল নির্ধারণ এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি, মিটার বিকল অবস্থায় থাকলে কেন দীর্ঘদিন তা ঠিক করা হয়নি, সে বিষয়েও দপ্তরের জবাবদিহি দাবি করা হয়েছে।
ত্রিপুরার বিদ্যুৎ দপ্তরের এই অনিয়ম সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর হতাশা এবং ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে দিলীপ সাহার মতো সাধারণ মানুষ এ ধরনের হয়রানির শিকার না হন। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনিক পর্যায়ে দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।