
ত্রিপুরা,নিজস্ব প্রতিনিধি,ত্রিপুরা জুড়ে শুক্রবার সকাল থেকেই থমথমে পরিবেশ। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) একযোগে সাতটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। মাদক পাচার এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে চালানো এই অভিযান নিয়ে রাজ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আগরতলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহকুমার একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে ইডি তাদের তদন্ত চালাচ্ছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইডি-র বিশেষ টিম তল্লাশি চালিয়েছে আগরতলা, নন্দননগর, নতুননগর, বক্সনগর, ধর্মনগর, কৈলাসহর, এবং বিশালগড়ের মতো এলাকায়। এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন প্রায় ২৫০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। উল্লেখযোগ্যভাবে, মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র বড়দোয়ালীতে সুব্রত দে নামে এক প্রাক্তন পুলিশ কর্মীর বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে।
ইডি-র এই অভিযান মূলত মাদক পাচার এবং বেআইনি অর্থ লেনদেনের বিরুদ্ধে। সূত্র জানিয়েছে, অভিযানের সময় একাধিক জায়গায় নথি, ডিজিটাল ডেটা এবং আর্থিক লেনদেনের অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই তথ্যগুলি মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশ প্রমাণে সাহায্য করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্তের অংশ হিসেবে যাদের বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন,অপু রঞ্জন দাস,দেবব্রত দে,বিশু ত্রিপুরা,কামিনী দেববর্মা,তাপস দেবনাথ,ধ্রুব মজুমদার,লিটন সাহা।
এছাড়া ধর্মনগরের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা এবং এক প্রাক্তন বাম মন্ত্রীর নামও তদন্তে উঠে এসেছে বলে জানা গেছে।
ত্রিপুরা সম্প্রতি মাদক পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রাজ্য থেকে প্রতিবেশী রাজ্য এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে মাদক সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে। বিভিন্ন অভিযান শুরু হলেও তার ফলাফল নিয়ে রাজ্যবাসীর মধ্যে রয়েছে গভীর সন্দেহ।
রাজ্যের সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন অভিযান পূর্বেও দেখা গেছে, তবে সেগুলি কখনোই কার্যকর ফলাফল দিতে পারেনি। ইডি, সিবিআই, এনআইএ-এর মতো সংস্থার অভিযানের পরে তদন্ত যেন অন্ধকারে হারিয়ে যায়।
এবারের অভিযান নিয়ে মানুষ আশাবাদী হলেও সন্দেহও রয়েছে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, অভিযানের নাটকীয় সূচনা হলেও, এর ক্লাইম্যাক্স হয়তো আর দেখা যাবে না। তবে যদি ইডি সত্যিই এই তদন্তে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে, তাহলে ত্রিপুরার মাদক পাচার চক্র এবং বেআইনি অর্থের যোগসাজশ ভেঙে পড়বে।
রাজ্যের মাদক পাচার এবং আর্থিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ইডি-র এই অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রশাসনিক প্রভাবশালী এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এটি সাধারণ মানুষকে হতাশ করবে। ইডি এবং অন্যান্য তদন্ত সংস্থার উচিত সঠিকভাবে এই তদন্ত চালিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।