
✍️প্রতিনিধি চারুকৃষ্ণ কর,কৈলাসহর
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করছে। এরই অংশ হিসেবে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর থেকে ভাঙমুন পর্যন্ত সড়কপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা বার্মা (মিয়ানমার) হয়ে চীন, মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া সহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। এই করিডোর চালু হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
এই সড়কপথটি চালু হলে একদিকে যেমন উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বহিঃবিশ্বের সাথে সরাসরি ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের বাণিজ্যিক উপস্থিতি আরও শক্তিশালী হবে। এছাড়া, পণ্য পরিবহনের সময় ও খরচ কমে আসবে, যা আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হবে।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে এই সড়কপথ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (NH-44) ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এই প্রকল্প ইতোমধ্যেই শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুই বছর আগে দরপত্রের মাধ্যমে বহিঃরাজ্যের নির্মাণ সংস্থা রাজেন্দ্র সিং ব্যাম্বো ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড এই কাজের দায়িত্ব পায়। এরই মধ্যে ২১ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৪ কোটি টাকা।
সড়ক নির্মাণের সময় তৎকালীন ডেপুটি কালেক্টর বিকাশ সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পুরো কাজের তদারকি করেছিলেন, যাতে নির্মাণকাজে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়। নির্মাণের গুণগত মান বজায় রেখে রাস্তার পরিধি যথাযথভাবে ঠিক রাখা হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে পণ্য পরিবহন সহজতর হলে রাজ্যের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়বে এবং বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে।
ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর থেকে ভাঙমুন হয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় পণ্য সহজে রপ্তানি করা সম্ভব হলে দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সড়কপথে পরিবহন খরচ কমানোর পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হওয়ায়, এই প্রকল্প ভবিষ্যতে উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম বড় অর্থনৈতিক সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হবে।