
Oplus_131072
প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুক্রবার বেলা বারোটায় ঊনকোটি জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কনফারেন্স হলে আয়োজিত হলো এক বিশেষ কর্মশালা— “টিকাদান সংক্রান্ত গণমাধ্যম সংবেদনশীলতা কর্মশালা।” এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের টিকাদান সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান প্রদান করা এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর কার্যকর উপায় শেখানো।
উক্ত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জেলা টিকাকরণ আধিকারিক ডক্টর সন্দীপন ভট্টাচার্য এবং জেলা নোডাল অফিসার ডক্টর অয়ন রায়। কর্মশালায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডক্টর সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, “বর্তমান সময়ে টিকাদান নিয়ে নানা ভুল ধারণা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্বিধার সৃষ্টি করতে পারে। এই বাস্তবতায় গণমাধ্যম কর্মীদের আরও সংবেদনশীল ও তথ্যসমৃদ্ধ করে তোলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।” আর তাই আজকের এই কর্মশালা। গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমেই প্রতিঘরে সহজতর ভাবে টিকাদানের বিষয়ে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের টিকাদানের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, এর উপকারিতা এবং কীভাবে ভুল তথ্য প্রতিরোধ করা যায়—এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
জেলা নোডাল অফিসার ডক্টর অয়ন রায় বলেন, “টিকাদান শুধু ব্যক্তিগত সুরক্ষাই নয়, এটি সামাজিক সুরক্ষাও নিশ্চিত করে। সঠিক তথ্য পৌঁছানো গণমাধ্যমের অন্যতম দায়িত্ব।”
তিনি আরও জানান, টিকা বিভিন্ন সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইনফ্যান্ট, শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিভিন্ন জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি চালু রেখেছে।
ভারত সরকারের “ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম (UIP)” এবং “ইন্দ্রধনুষ মিশন” এর মাধ্যমে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের বিনামূল্যে টিকা প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও, COVID-19 মহামারির সময় “কোভিন প্ল্যাটফর্ম” ব্যবহারের মাধ্যমে টিকাদানকে আরও সহজ ও ডিজিটালভাবে সংগঠিত করা হয়েছিল।
এই কর্মশালায় টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য কীভাবে জনগণের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছানো যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের টিকাদান কর্মসূচির যথাযথ প্রচার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।
অনেক সাংবাদিক মত প্রকাশ করেন যে,”আমাদের দায়িত্ব শুধু খবর প্রকাশ করা নয়, বরং জনগণকে স্বাস্থ্যসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করাও গুরুত্বপূর্ণ।”
তারা জানান, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টিং, তথ্যভিত্তিক প্রচার, এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভুল তথ্য সংশোধনের মাধ্যমে জনগণের আস্থা বাড়ানো সম্ভব।
“টিকাদান সংক্রান্ত গণমাধ্যম সংবেদনশীলতা কর্মশালা” অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা জানান, এই কর্মশালা তাদের তথ্য-প্রতিবেদন তৈরিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশল শিখতে সহায়তা করেছে।
জনস্বাস্থ্য ও গণমাধ্যমের সমন্বয়ে এমন কর্মশালা আরও আয়োজন করা হলে, জনগণের মধ্যে টিকাদান সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে এবং টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং এক সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।