
ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আজ জিরানীয়ার মাধববাড়ি খাদ্য গুদামে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কর্মসূচির শুভ সূচনা করা হয়। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “কৃষকরা আমাদের অন্নদাতা। তাঁদের স্বনির্ভর করে তোলার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বর্তমান সরকার গঠিত হওয়ার পরই ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” তিনি জানান, ২০১৮-১৯ সালে কেজি প্রতি ১৭.৫০ টাকায় ধান ক্রয়ের সূচনা হয় এবং চলতি রবি মরসুমে এই মূল্য বেড়ে প্রতি কেজি ২৩ টাকা হয়েছে। এবছর রাজ্যে ২১,৩১৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের অত্যাধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ভর্তুকি মূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষি পণ্যের সঠিক বাজারজাতকরণের জন্য কৃষি বাজার গড়ে তোলার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা এবং রাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করা।
অনুষ্ঠানে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, “সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য সহায়ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে এই ধান ক্রয় কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য প্রদানের মাধ্যমে তাদের আর্থিক স্থিতি উন্নত করার লক্ষ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে।” তিনি আরও জানান, সারা রাজ্যে ৫১টি কেন্দ্রে একযোগে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ছয়জন কৃষককে পুষ্পস্তবক ও শাল দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। সরকারি ভর্তুকি মূল্যে ২০ জন কৃষককে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয় এবং দুইজন কৃষককে পুকুর খননের অনুমোদনপত্র তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের অধিকর্তা সুমিত লোধ। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, জিরানীয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান প্রীতম দেবনাথ, এবং রাণীরবাজার পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারপার্সন প্রবীর কুমার দাস। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন জিরানীয়া নগরপঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন রতন কুমার দাস।
এই কর্মসূচি রাজ্যের কৃষকদের উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতির আরেকটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।