
সাব্রুম,নিজস্ব প্রতিনিধি,সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কের পাশে এক গাড়ি চালকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সাব্রুম মহকুমায়। বৃহস্পতিবার রাতে জলেফা আমতলী ব্রিজের পাশে একটি ড্রেন থেকে উদ্ধার করা হয় রঞ্জিত দেবনাথ (৫০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি গাড়ি দুর্ঘটনা বলে দাবি করা হলেও স্থানীয়রা এবং সহকর্মী যানচালকরা এটি পরিকল্পিত খুন বলে অভিযোগ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রাত আনুমানিক ৯টার সময় একটি গাড়ি রঞ্জিত দেবনাথকে ধাক্কা দেয়, যার পরেই ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তবে স্থানীয়দের সন্দেহ, এটি দুর্ঘটনার আড়ালে একটি সুপরিকল্পিত খুন। ঘটনার পর ঘাতক বাহিনী মৃতদেহটি ব্রিজের পাশে ড্রেনে ফেলে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে সাব্রুম মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক রঞ্জিত দেবনাথকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৃতদেহের নাক ও কান দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং তার পা ভাঙা ছিল। যদিও মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে।
পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এলাকাবাসী এবং যানচালকদের অভিযোগ, এই ঘটনার সঠিক তদন্তের অভাব রয়েছে। নিহতের সহকর্মীরা দাবি করেছেন, রঞ্জিত দেবনাথকে ভারী কিছু দিয়ে বেধড়ক মারধর করে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই যানচালকরা মহকুমা হাসপাতালে ভিড় জমায়। তারা অভিযোগ করেন, জাতীয় সড়কে কোনো পেট্রোলিং নেই এবং মহকুমা পুলিশ প্রশাসন শুধুমাত্র চাঁদাবাজি আর অন্যান্য কাজে ব্যস্ত। শুক্রবার তারা সাব্রুম স্ট্যান্ডে কর্মবিরতি পালন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তোলেন।
মৃত রঞ্জিত দেবনাথ ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। তার মৃত্যুর ফলে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। যানচালকরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সঠিক তদন্ত করতে হবে এবং পরিবারটিকে সরকারি সাহায্য দিতে হবে।
মহকুমায় ক্রমবর্ধমান অপরাধ এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য স্থানীয়রা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ প্রশাসন অপরাধ দমনে নিষ্ক্রিয় এবং নেশা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
যদি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত না হয়, তাহলে যানচালকরা জেলা পুলিশ সুপার এবং রাজ্যের ডিজিপির কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, অপরাধীদের যদি শাস্তি না দেওয়া হয়, তাহলে মহকুমায় আইনশৃঙ্খলার আরও অবনতি ঘটবে।
রঞ্জিত দেবনাথের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্ত এবং পুলিশের তদন্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও যানচালকদের ক্ষোভ আর অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এবং সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।