প্রতিনিধি অনুপম পাল,কূলাসহর
আদিবাসী সমাজের ভগবান ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রদূত ধরতি আবা ভগবান বিরসা মুন্ডার আত্মত্যাগ ও সংগ্রামকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর ১৫ই নভেম্বর দেশে পালন করা হয় জনজাতি গৌরব দিবস। ভারত সরকার তাঁকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দিয়েছে। সেই উপলক্ষে রাজ্যেও সরকারি উদ্যোগে ব্যাপক আয়োজন করা হয়।আজ চন্ডিপুর আরডি ব্লক, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে জনজাতি গৌরব দিবস ও প্রথম রাজ্যভিত্তিক ঝুমুর ও চা উৎসব ২০২৫ অনুষ্ঠিত হলো রাংরুং টি-ইষ্টেট হাই স্কুল মাঠে।অনুষ্ঠানের সূচনা হয় চারা গাছে জলসিঞ্চনের মাধ্যমে। উদ্বোধন করেন রাজ্যের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়। সভাপতিত্ব করেন মন্ডা সমাজের সমাজপতি ফাগু মুন্ডা।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলার সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, অতিরিক্ত জেলাশাসক অর্ঘ্য সাহা, তথ্য দপ্তরের সিনিয়র আধিকারিক সেনগুপ্ত, চন্ডিপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন সম্পা দাশ পাল, জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত ক্লিকদার, জেলা পরিষদ সদস্য বিমলকর প্রমূখ।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন চন্ডিপুর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দেবপ্রিয়া দাস।অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য শিবির, প্রশাসনিক শিবির এবং বিভিন্ন দপ্তরের প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়।
সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর চারজন গর্ভবতী মহিলার হাতে পুষ্টিকিট তুলে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দপ্তর আয়ুষ্মান ভারত হেলথ অ্যাকাউন্ট প্রদান করে। মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিআরটিসি ও এসটি সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়। কৃষি, কৃষক কল্যাণ ও মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সামগ্রী সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের মধ্যবর্তী সময়ে চা–বাগিচার শিল্পীরা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী কাটি নৃত্য পরিবেশন করেন। সমাজকল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে একটি সচেতনতামূলক নাটকও মঞ্চস্থ হয়।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী টিঙ্কু রায় বলেন,এই প্রথম তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ঝুমুর নৃত্য, যা এবার রাজ্যব্যাপী উদযাপন করা হচ্ছে। আগের সরকারের আমলে চা বাগানের শ্রমিকরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কারণে বিভ্রান্ত ছিলেন, অথচ এই সরকারের গত সাত বছরে চার হাজারেরও বেশি জমির পাট্টা, পাঁচ হাজারেরও বেশি রেশন কার্ড এবং বহু আবাস যোজনা ঘর শ্রমিকদের প্রদান করা হয়েছে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ছিল মাত্র ১০৫ টাকা, যা বর্তমান সরকার বৃদ্ধি করে ২০২৫ সালে ২০৪ টাকা করেছে — “এটাই সবকা সাথ, সবকা বিকাশ”। শুধুমাত্র শহর নয়, বাগান শ্রমিকদের উন্নয়নেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
সন্ধ্যায় আসাম রাজ্যের ডিআর লাকরার নেতৃত্বে আশরা মিউজিক ব্যান্ডের মনোমুগ্ধকর মিউজিক্যাল নাইটের আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি হবে।