
প্রতিনিধি অনুপম পাল,কৈলাসহর
স্বপ্নের শুরুতেই শেষ। মাত্র ৬ দিন আগে বিয়ে করেছিলেন ভারতীয় নৌসেনার তরুণ অফিসার বিনয় নারওয়াল। জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় কাটাতে স্ত্রী হিমাংশীকে নিয়ে কাশ্মীরের পেহেলগামে হানিমুনে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্নভঙ্গের ক্ষণ গুনছিল না কেউ। সোমবার, স্ত্রীর চোখের সামনেই রক্তাক্ত পরিণতি—জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হলেন লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল।
ঘটনাটি ঘটে শ্রীনগর থেকে প্রায় ৯০ কিমি দূরে, পর্যটনে পূর্ণ পেহেলগামের এক আবাসিক হোটেলে। আচমকাই আততায়ীরা চড়াও হয়। কোনও সুযোগ না দিয়েই কাছ থেকে গুলি চালানো হয় বিনয় নারওয়ালের উপর। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন এই সাহসী অফিসার। স্ত্রীর আর্তচিৎকারে কেঁপে ওঠে উপত্যকা।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছয় শহিদের কফিন। চারপাশে শোকের ছায়া। আর সেই কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে, চোখের জল মুছে নিয়ে স্ত্রীর সাহসী ঘোষণা, “আমি তোমার জন্য সারাজীবন গর্ব করব, বিনয়। জীবনের সর্বত্র। তুমি শহিদ হয়েছ, মাথা উঁচু করে। জয় হিন্দ!”
এই দৃশ্যের ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয় সামাজিক মাধ্যমে। কাঁপতে থাকে কোটি হৃদয়। সদ্য বিবাহিত স্ত্রী, যার সিঁথির সিঁদুর মোছার কথা ছিল না এত তাড়াতাড়ি, সে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে বলে উঠছেন, “জয় হিন্দ!”
কাশ্মীর আবারও রক্তাক্ত। আবারও এক ভারতীয় সেনানির জীবন নিল সন্ত্রাস। প্রশ্ন উঠছে—এই উপত্যকায় নিরাপত্তা কোথায়? পর্যটকদের ভরসা ফিরবে কীভাবে? সদ্য বিবাহিত এক তরুণীর চোখের সামনে স্বামীকে খুন করার এই নৃশংসতা কেবল পরিবারকেই নয়, গোটা জাতিকে আহত করেছে।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
কিন্তু ততক্ষণে এক তরুণ সেনানির প্রাণ ঝরে গেছে। এক নববধূর সিঁদুর মুছে গেছে। আর আকাশভেদী একটি কণ্ঠ গর্জে উঠেছে—
“জয় হিন্দ!” কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়,আর কতদিন এইভাবে শহিদের রক্তে ভিজবে আমাদের উপত্যকা?