
সংবাদ প্রতিনিধি। অনুপম পাল। কৈলাসহর
আরজিএম হাসপাতালে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগে মা ও সন্তানের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ঊনকোটি জেলার শ্রীনাথপুর এলাকায়। মৃত মহিলার নাম রুবিনা বেগম (২৪)। তিনি শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হেলাল মিয়ার স্ত্রী। জানা গেছে, সোমবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে আরজিএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রুবিনাকে। সেখানে সন্তান প্রসব করলেও নবজাতক শিশুটি মৃত অবস্থায় জন্মায়।
তবে অভিযোগ, এখানেই শেষ হয়নি দুর্ভাগ্যের কাহিনি। সন্তান প্রসবের পর রুবিনা বেগমের শরীরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরিবারের অভিযোগ, তারা বার বার কর্তব্যরত চিকিৎসকের খোঁজ করলেও কেউ ছুটে আসেননি। চিকিৎসক দেখার অভাবে রাতভর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। শেষমেশ মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ রুবিনাকে জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়।
জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয় রুবিনা বেগমের। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। রুবিনার স্বামী হেলাল মিয়া সহ পরিবারের সদস্যরা আরজিএম হাসপাতালের কর্তব্যরত স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরাসরি গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।
জেলা হাসপাতালের মেডিকেল সুপার ডাঃ রোহন পাল জানান, “রুবিনা বেগম আরজিএম হাসপাতালে মৃত নবজাতকের জন্ম দেন। এটি ছিল তাঁর প্রথম সন্তান। প্রসবের পর রক্তক্ষরণ শুরু হলে আজ সকালে চিকিৎসক চিরঞ্জীব দেব মহিলাকে জেলা হাসপাতালে রেফার করেন। আমাদের চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেন, কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়।”
এই ঘটনার পর রুবিনার পরিবারের সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যেন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে এমন গাফিলতি যাতে আর না ঘটে, তার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে জবাবদিহি করতে হবে।
এদিকে একটি তরতাজা প্রাণ ও একটি নবজাতকের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শ্রীনাথপুর এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। গ্রামবাসীরা বলছেন, “চিকিৎসকের অবহেলায় দুই প্রাণ ঝরে গেল—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যাদের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে, তাদের শাস্তি চাই।”