
Oplus_131072
কৈলাসহর,প্রতিনিধি অনুপম পাল,বিদেশ ভ্রমণ ভ্রমণপিপাসুদের কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু অসাধ্য আর নয়। আজকাল অনেকেই পাড়ি দেন বিদেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখতে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। কোনও জায়গায় আবার নামে পর্যটকদের ঢল। ঠিক এমনই একটি যায়গা ওপার বাংলার শ্রীমঙ্গল। দুটি পাতার একটি কুঁড়ির দেশ শ্রীমঙ্গল। চায়ের সঙ্গে এভাবেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে শ্রীমঙ্গলের নাম। চায়ের সুবাদে ওপার বাংলার শ্রীমঙ্গলের সুনাম ছড়িয়ে আছে বিশ্বব্যাপী। আর তাই ভ্রমণে আগ্রহী পর্যটকদের অনেকেরই পছন্দ ওপার বাংলার এই চায়ের দেশ।
কৈলাসহর থেকে চাঁতলাপুর সীমান্ত পেরিয়ে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার পথ পেরোলেই শ্রীমঙ্গল উপজেলা। সবুজ চা-বাগান রয়েছে এ অঞ্চলে। এজন্য এ স্থানে প্রতিদিনই দেশী-বিদেশী পর্যটকের সমাগম হয়ে থাকে।আর এ কারণে শ্রীমঙ্গলে গড়ে ওঠেছে পাঁচ তারা হোটেলসহ অনেক ছোট বড় আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁ। শ্রীমঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে চা বাগান। এক তথ্য অনুযায়ী ওপার বাংলার দেশের চা বাগানের ৪৩ শতাংশ চা উৎপাদন হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকেই। আর তাই অনেকেই একে চায়ের দেশও বলে থাকেন। চারিদিকে সবুজে ঘেরা শ্রীমঙ্গলে বেশ কিছু প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও রয়েছে।আর যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ভূমি অফিসের ভেতরে অবস্থিত ত্রিপুরা মহারাজার রাজকাচারী বাড়ি।প্রতি বৎসর রাজন্য আমলের এই রাজকাচারী বাড়ী পরিদর্শনে ভারতীয় পর্যটকরা ভিড় করেন। এছাড়া বিদেশী পর্যটকরাও এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে আসেন বলে সেখানকার স্থানীয়দের অভিমত। সংস্কারের অভাবে বিলিন হওয়ার পথে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। প্রাচীন ভবনটি সংস্কার করে পর্যটকদের জন্য উপযোগি করার দাবী উঠছে সর্বত্র। তবে এখনও উদাসীন বাংলাদেশ সরকার।বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলে রয়েছে রাজকাচারী বাড়ি। এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনেই এখন শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুমি অফিস। একসময় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ছিলো ত্রিপুরা রাজ্যের অধিনে। রাজধানী দুরে হওয়ায় অষ্টাদশ শতকে ত্রিপুরার রাজা খাজনা আদায় প্রতিদিনকার রাজকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে এখানে তৈরী করেছিলেন কাচারীবাড়ি। কাঁচারীবড়িটির দৈর্ঘে ৩০ ফুট প্রস্থে ২০ ফুট। এতে রয়েছে ৩টি বিশাল আকারের কক্ষ,একটি বারান্দা, ৮টি দরজা সহ মোট ৯টি জানালা। এর প্রতিটি দেয়াল ১২ ইঞ্চি চওড়া, চুন–সুরকি দিয়ে নির্মিত। পাশেই রয়েছে বাঁধানো ঘাঁটসহ বিশালাকার পুকুর।স্থানীয় দের সাথে কথা বলে জানা যায় ত্রিপুরার রাজা এখানে আসতেন হাতিতে চড়ে। ইতিহাসের ধারক এই ভবনটি এখন প্রায় ধ্বংসের মুখে। বিলিন হ্ওয়ার পথে ঘাট ও পুকুর।শ্রীমঙ্গল দেশের অন্যতম পর্যটন অঞ্চল। রাজকাচারী বাড়িটির দিকে বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকার নজর দিলে হয়ত এই রাজকাচারী বাড়িই হয়ে উঠতে পারে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
পর্যটক হিসেবে ভারত থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ফিরে আসা এক ভারতীয় নাগরিক জানান প্রত্নতাত্ত্বিক এই নিদর্শনের দিকে একদমই নজর দিচ্ছেনা বাংলাদেশ সরকার। একসময় মৌলভীবাজার ত্রিপুরার রাজ্যের অধিনেই ছিলো আর তাই বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসা পর্যটকদের দাবী বাংলাদেশ সরকার যেহেতু এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষায় নজর দিচ্ছেনা সেই ক্ষেত্রে ত্রিপুরা সরকার কিংবা ভারত সরকার একটু নজর দিলেই পর্যটকদের জন্য যেমন একটি অন্যতম স্থান হয়ে উঠবে ঠিক সেই ভাবে বেঁচে থাকবে রাজন্য আমলের এই নিদর্শন।