প্রতিনিধি অনুপম পাল
কৈলাসহর,ঊনকোটি ত্রিপুরা
চন্ডীপুর ব্লকে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ব্লক ভিত্তিক পিঠে পুলি উৎসব ২০২৫-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। জারুলতলি গ্রামের মধ্যস্থলে আয়োজিত এই উৎসবের সূচনা করেন ত্রিপুরা রাজ্যের মন্ত্রী টিংকু রায়। চন্ডীপুর আরডি ব্লক এবং ভিলেজ অর্গানাইজেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসব তিন দিনব্যাপী চলবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঊনকোটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, চন্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সম্পা দাস পাল, ভাইস চেয়ারম্যান বিনয় সিংহ, বিশিষ্ট সমাজসেবী পিন্টু ঘোষ, চন্ডীপুর ব্লকের বিডিও প্রসেনজিৎ মালাকার এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
চন্ডীপুর ব্লকের অধীনে থাকা স্ব-সহায়ক দলগুলো উৎসবে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি স্টলে দলের সদস্যরা নিজেদের তৈরি করা বিভিন্ন পণ্য এবং নানান স্বাদ ও বৈচিত্র্যের পিঠে-পুলি প্রদর্শন করেন। উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করতে গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে তৈরি করা হয় “বুড়ির ঘর।”
মন্ত্রী টিংকু রায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চন্ডীপুর ব্লকের কৃষকদের মধ্যে মিনি পাওয়ার টিলার, স্প্রে মেশিনসহ বিভিন্ন কৃষি সহায়ক সরঞ্জাম বিতরণ করেন। জাতীয় পর্যায়ের খো-খো খেলায় অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় ও তাদের কোচকেও সংবর্ধিত করা হয়। এছাড়াও স্ব-সহায়ক দলগুলোর মধ্যে লোনের অনুমোদনপত্র ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
উদ্বোধনের পর মন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিরা স্ব-সহায়ক দলের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন এবং তাদের তৈরি পিঠে-পুলির স্বাদ নেন। মন্ত্রী টিংকু রায় তার বক্তব্যে জানান, এই ধরনের উৎসব আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
মন্ত্রী টিংকু রায় তার বক্তব্যে রাজ্যের স্ব-সহায়ক দলের সদস্যাদের আর্থিক সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। রাজ্যে বর্তমানে ৯১ হাজার স্ব-সহায়ক দলের সদস্য লাখপতি হয়েছেন, যাদের বার্ষিক আয় এক লাখ টাকার বেশি। তিনি আরও জানান, রাজ্যের বিজেপি সরকারের সময়কালে মহিলারা প্রকৃত অর্থেই সম্মান ও সুযোগ পাচ্ছেন।
মন্ত্রী সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সন্তানদের প্রতিষ্ঠার পর যদি তাদের মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে হয়, তবে তা সমাজের জন্য লজ্জার। আমাদের উচিত মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে সমাজকে এগিয়ে নেওয়া।
তিন দিনব্যাপী চলা এই উৎসবে দিনের বেলায় গ্রামীণ খেলা এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দারা যেমন আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন, তেমনি নিজেদের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করানো যাবে।
পিঠে পুলি উৎসব ২০২৫ শুধুমাত্র একটি উৎসব নয়, বরং তা রাজ্যের গ্রামীণ জীবনের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক সাফল্যের প্রতিচ্ছবি। চন্ডীপুরে এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও আরও বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদী আয়োজকরা।