দ্যা ইউনাইটেড প্রতিনিধি অনুপম পাল,ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে আজ অনুষ্ঠিত হলো সিপিআই(এম) দলের ২৪তম মহকুমা সম্মেলন। এ উপলক্ষে ঊনকোটি কলাক্ষেত্রের সামনে একটি বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, এবং রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রাজেন্দ্র রিয়াং। সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী।
প্রধান বক্তা মানিক সরকার তাঁর ভাষণে রাজন্য শাসনের সময়কালের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “১৩০০ বছরের রাজন্য শাসন ত্রিপুরার উন্নতির জন্য কতটুকু ভূমিকা রেখেছে? শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেচ, কর্মসংস্থান—এই সবকিছুতেই তারা ব্যর্থ হয়েছে।”
তিনি জানান, রাজন্য শাসন ত্রিপুরার উপজাতি ও অনুপজাতি অংশের মানুষের শিক্ষা প্রসারে কোন উদ্যোগ নেয়নি। বরং জনশিক্ষা সমিতির মতো সংগঠন, যা নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে কাজ করত, সেটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল।
মানিক সরকারের ভাষায়, জনশিক্ষা সমিতি ছিল একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ। এর নেতৃত্বে ছিলেন সুধন্য দেববর্মা এবং হেমন্ত দেববর্মা। তবে রাজন্য শাসকগণ এ সংগঠনকে নষ্ট করতে চেয়েছিল এবং এর নেতাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছিল। তিনি বলেন, “আজকের প্রজন্ম এসব ঘটনা জানে না, বরং তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।”
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “কমিউনিস্ট পার্টি সব সময় খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার এবং তাদের দৈনন্দিন লড়াইয়ের সঙ্গে যুক্ত। কৃষক, খেতমজুর, এবং শ্রমিক শ্রেণির অধিকারের জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।” তিনি সিপিআই(এম)-এর গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সারাদেশে দলটির ১০ লক্ষ সদস্যের ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী এবং রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রাজেন্দ্র রিয়াংও বক্তব্য রাখেন। তাঁরা ত্রিপুরার বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং জনসাধারণের অধিকার রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেন।
২৪তম মহকুমা সম্মেলনের এই জনসভা সিপিআই(এম)-এর জন্য যেমন শক্তি সঞ্চারের ক্ষেত্র, তেমনি রাজ্যের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে। নেতারা জনগণের অধিকার রক্ষা এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।